রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশু’র সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। উপজেলার বিআরবি আজগড়া বিদ্যালয়ের একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ওই স্কুলের সভাপতি, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশুকে ফোন করেন লিটন আলী।
ফোনালাপের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লিটন আলীর ভাষা ও শব্দ চয়ন ছিলো অশালীন, ঔদ্ধত্যপূর্ণ, আদেশ করার সামিল, মানহানিকর, তুচ্ছতাচ্ছিল্য এমনকি হুমকি স্বরূপও। দেশের একজন সাধারণ নাগরিকের সঙ্গেও প্রজাতন্ত্রের একজন সেবকের এমন অশোভনীয় আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। উপরন্তু মল্লিক সুধাংশু স্কুল কমিটির সভাপতি ছাড়াও খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, ঐতিহ্যবাহী খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি, খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ও বৈশাখী টিভি খুলনার বিভাগীয় প্রতিনিধি। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব। তার সঙ্গে এমন আচরণের বিষয়টি গোটা সাংবাদিক সমাজকে মর্মামত করেছে। শুধু তাই নয়, বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষও।
এ ঘটনার পর বিষয়টি খুলনার জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসানকে জানানো হয়েছে। তাছাড়া খুলনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা টিভি রিপোর্টার ইউনিটি, খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা সংবাদপত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন তার প্রত্যাহার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। ইউএনও’র প্রত্যাহার এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত সাংবাদিক সমাজ ধারাবাহিক আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। খুলনা ছাড়াও সারা দেশের সাংবাদিকরা এ আন্দোলনের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। পত্রপত্রিকায় এ অশভোনীয় আচরণ সম্পর্কে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
এমনই পরিস্থিতিতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) খুলনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের যৌথ সভায় জোর দাবি উঠেছে সাত দিনের মধ্যে তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকমর্তা মো. লিটন আলীকে খুলনা জেলা থেকে প্রত্যাহার করা এবং তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। খুলনা প্রেসক্লাবে তার অশোভনীয় আচরণের প্রমাণ রক্ষিত আছে।
বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষে এ স্মারকলিপি দেওয়া সময় উপস্থিত ছিলেন- খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশু, যুগ্ম-সম্পাদক আলমগীর হান্নান, ক্লাবের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু, শেখ আবু হাসান ও এস এম হাবিব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা হাসান আহমেদ মোল্লা, খুলনা সংবাদপত্র পরিষদের পক্ষে মো. মোস্তফা সরোয়ার, খুলনা টিভি রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক রকিব উদ্দিন পান্নু, খুলনা টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়ামুল হোসেন কচি, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুমার রায় ও মামুন রেজা, ক্লাব সদস্য আব্দুল মালেক, মাহবুবুর রহমান মুন্না, উত্তম মন্ডল, ইউজার সদস্য সুদীপ দাস, কপিলমুনি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রজ্জাক রাজু ও ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এইচ এম শফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আসাফুর রহমান কাজল, কলিন হোসেন আরজু এম এ কবীর মুন্সি ও নাজমুল আহসান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এমআরএম/ওএইচ/