এভাবেই কেঁটে গেলো সোয়া এক ঘণ্টা। তবুও দেখা মিলছে না ডাক্তারের।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১০টার দিকে সরেজমিনে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ হায়দারের কক্ষের সামনে দেখা মেলে রোগীদের লম্বা লাইন। লাইনের ফাঁকে ফাঁকে হাসপাতালের ফ্লোরে বসেও থাকতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন বৃদ্ধা ও শিশুকে।
নির্ধারিত সময়ের দেড়ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে নিজের কক্ষে ডোকেন ডাক্তার মোহাম্মদ ইউসুফ হায়দার। এর পরপরই সেখানে ঢুকে পড়েন বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির (রিপ্রেজেন্টেটিভ) বিক্রয় প্রতিনিধিরা। তাদের সঙ্গে আলাপের ফাঁকে ফাঁকেই রোগী দেখছেন ডাক্তার।
হাসপাতালে আসা আমিনুর রহমান নামে একজন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এতো বড় ও সুন্দর হাসপাতাল। বাইরে থেকে দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। অথচ এর ভেতরকার সেবার কোনো মান নেই বললেই চলে। ডাক্তার সাহেব রোগীদের লাইন দেখে অস্থির। সেবা দিচ্ছেন দ্রুতগতিতে। সমস্যার কথা বলার মতো সময় পাওয়াই কঠিন’।
আমেনা বেগম নামে এক নারী সকাল থেকে নাতনিকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। হাসপাতালের নার্সসহ বিভিন্ন ব্যক্তিরা ফাঁকে গলে রোগী দেখিয়ে নিচ্ছেন অনায়াসে। কিন্তু আমেনাকে পড়ে থাকতে দেখা গেলো সেই লাইনেই।
মহসিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘মেয়ের কানে সমস্যার কারণে ডাক্তারের পরামর্শ ও সেবা নিতে এসেছি। দেড়ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তারের কক্ষে ঢুকতে পারিনি। কক্ষের ভেতরে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের জন্য সমস্যার কথা বলাই মুশকিল। ডাক্তার দেখানোর পর কক্ষের বাইরেও ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি করেন সেই প্রতিনিধিরা’।
এ বিষয়ে কথা বললে ডাক্তার মোহাম্মদ ইউসুফ হায়দার বাংলানিউজকে জানান, তিনি ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আসেন রোগী দেখতে।
দেরি করে আসার কারণ জানতে চাইলে রাস্তার যানজটকে দায়ী করেন ইউসুফ হায়দার।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। হাসপাতালে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ একজন মাত্র চিকিৎসক। এ কারণে সেখানে রোগীর চাপ একটু বেশি থাকে।
ইউসুফ হায়দার ঢাকা থেকে আসার কারণে বিলম্ব হতে পারে জানিয়ে সাইফুর রহমান বলেন, অন্যান্য ডাক্তাররা যথাসময়ে রোগী দেখা শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
জিপি