এ অবস্থায় একদিকে যেমন যানজট অসনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে, তেমনি ধুলোবালিতে রাজধানীবাসীর বাড়ছে রোগব্যাধি। এমন এক ভোগান্তির সড়ক এখন ধানমন্ডি ২৭ ও মোহাম্মদপুর-জিগাতলা সড়ক।
সরেজমিন দেখা যায়, ধানমন্ডি ২৭ নং সড়কের রোড ডিভাইডারের পাশ দিয়ে ৪ ফুট করে রাস্তা খুঁড়ে কাজ করেছে ওয়াসা। কাজ শেষ হলেও এখনো রাস্তার কার্পেটিং শেষ হয়নি। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে তীব্র যানজটে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে মোহাম্মদপুর-জিগাতলা মোড় পর্যন্ত সড়কে নতুন করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) কাজ শুরু করেছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে শারীরিক শিক্ষা কলেজের সামনে দিয়ে রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে ৪ ফুট রাস্তা খুঁড়ে কাজ চলছে। আর খোঁড়াখুঁড়ির মাটি দুই পাশে ফেলে আরও দুই ফুট সড়ক চলাচলের অচল করে রাখা হয়েছে। যার ফলে ১৬ ফুটের রাস্তা এখন ১০ ফুটে পরিণত হয়েছে! ফলে মোহাম্মদপুর থেকে জিগাতলা হয়ে নিউমার্কেট, মতিঝিলগামী যাত্রীদের দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও সড়কগুলোতে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। রাস্তার পাশে মাহফুজুল নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় এক বছর ধরে এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী। এখন আবার নতুন করে রাস্তা খোঁড়া শুরু হয়েছে, মানুষ বের হবে কিভাবে? এখন মোহাম্মদপুর থেকে জিগাতলা যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। অথচ আগে ২০ মিনিটেই যাওয়া যেতো।
এদিকে ধুলায় রাস্তার পাশে গাছের সবুজ পাতা তামাটে বর্ণ ধারণ করেছে। আর ভবনগুলো পুরোই বিবর্ণ হয়ে গেছে। রাস্তার পাশের দোকান, হোটেল ব্যবসা প্রায় লাটে উঠেছে। মানুষই চলতে পারে না দোকান খুলে লাভ কী? এমন প্রতিক্রিয়া মোহাম্মদপুর মোড়ে মুদি দোকানদার রবিউল ইসলামের (রবি)।
তিনি বলেন, দোকান খুলে বসে থাকা কঠিন। রাস্তার ধুলায় সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কেউ বসতে পারে না। কাস্টমার না এলে ব্যবসা করবো কিভাবে? কবে এই অবস্থার শেষ হবে কেউ জানে না।
বছরজুড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, এলার্জি, সর্দি, কাঁশি, ফুসফুসি প্রদাহজনিত রোগ বাড়ছে রাজধানীবাসীর।
যাদের এসব বিষয় তদারকি করার কথা সেই সিটি করপোরেশনই অগোছালো। তাদের কাজই পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আবার কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে।
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রফেসর ড. আখতার মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশের সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের বড় অভাব। তাছাড়া কাজের ধরনও জনবান্ধব নয়। উন্নত দেশে রাস্তার কাজের সময় মোটা কাভার্ড ভ্যান দিয়ে ঢেকে রাখা হয় যেন ধূলিকণা না ওড়ে। কিন্তু আমরা কাজ করি উল্টো। তাছাড়া কাজগুলো যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হতো তাহলে রাজধানীবাসীকে এভাবে ধুঁকতে হতো না। এজন্য দুই সিটি মেয়রদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
এসএম/জেডএস