ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উত্তরবঙ্গের যাত্রী বাড়ছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
উত্তরবঙ্গের যাত্রী বাড়ছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে নৌ-রুটগুলোতে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ছাড়াই বেপরোয়াভাবে চলছে স্পিডবোট। ছবি: বাংলানিউজ

আরিচা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে: উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে ভোগান্তি বাড়ছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে। মহাসড়কজুড়ে থেমে থেমে যানজট। ওই যানজট থেকে রেহাই পেতে অনেকেই এখন চলাচল করছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট হয়ে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচল করছে উত্তরবঙ্গের পরিবহন। এতে করে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের চাপ বাড়ছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে।

এসব যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে নিয়মিতভাবে চলাচল করছে ১৩টি লঞ্চ এবং ২০টি স্পিডবোট। চলতি বছরের শুরু থেকে আগের চেয়ে যাত্রী সংখ্যা কিছু বাড়লেও পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে যাত্রীসংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে বলে জানান লঞ্চ ও স্পিডবোট কর্তৃপক্ষের লোকজন।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা লঞ্চঘাট ও স্পিডবোট ঘাট এলাকা ঘুরে সরেজমিনে এসব তথ্য জানা যায়। পারের অপেক্ষায় যাত্রীরা।  ছবি: বাংলানিউজঢাকা শহরের ব্যবসায়ী ইমন হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য লোকজন থাকার কারণে নিয়মিতভাবে ঢাকা থেকে পাবনায় যাতায়াত করেন তিনি। সব সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক হয়ে যাতায়াত করলেও গত কয়েকমাস ধরে যাতায়াত করেন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে। এতে করে তার সময় ও টাকা উভয়ই কম লাগছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশগামী শারমিন আক্তার নামে মধ্যবয়সী এক নারী বাংলানিউজকে জানান, অসুস্থ মাকে নিয়ে গত সপ্তাহে ঢাকায় আসেন তিনি। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে তার মা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। যে কারণে বিকল্প পথ হিসেবে তিনি গাবতলী থেকে শ্যামলী পরিবহনের বাসযোগে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ ভোগান্তি হলেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে কোনো যানজট বা ভোগান্তি নেই বলেও জানান তিনি।

শিবালয়ের আরিচা লঞ্চঘাট এলাকার টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বরত ব্যক্তি আসাদুর রহমান বাদশা বাংলানিউজকে জানান, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যাত্রী পারাপারে ১৩টি লঞ্চ চলাচল করছে। আগে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শ যাত্রী পারাপার হলেও এখন প্রতিদিন হাজারের উপরে যাত্রী পারাপার হয়। ঢাকা থেকে পাবনা এক্সপ্রেস ও শ্যামলী পরিবহনের বাস সার্ভিস চালু হওয়ার কারণে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

মানিকগঞ্জের আরিচা থেকে পাবনার কাজিরহাটে লঞ্চযোগে নৌরুট পারাপার হতে সোয়া এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ভাড়া মাত্র ৫৫ টাকা।

আরিচা স্পিডবোট টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা রুস্তম হোসেন জানান, শ্যামলী পরিবহনের প্রায় সব যাত্রী স্পিডবোটে করে নৌরুট পারাপার হয়। এছাড়া অন্য যেকোনো যাত্রী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২শ’টাকা ভাড়ায় স্পিডবোটে নৌরুট পারাপার হতে পারে। ১৫/১৬ জন যাত্রী নিয়ে মাত্র ১৬ থেকে ২০ মিনিটে আরিচা থেকে কাজিরহাটে পৌঁছাতে পারে স্পিডবোট। প্রায় মাস তিনেক আগেও প্রতিদিন ২ থেকে আড়াইশো যাত্রী নৌরুট পারাপার হলেও এখন প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশো যাত্রী নৌরুট পারাপার হচ্ছে।

শ্যামলী পরিবহনের আরিচা টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বরত সাদেকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা এলাকার যাত্রীরা তাদের পরিবহনে যাতায়াত করেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহসড়ক হয়ে পাবনা যেতে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। মাঝে মাঝে আরও বেশি সময় যানজটে থেকে নষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে পাবনা যেতে সময় লাগছে মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টা থেকে ৫ ঘণ্টা। লঞ্চযোগে নৌরুট পারাপার।  ছবি: বাংলানিউজনৌরুট পারের স্পিডবোট ভাড়াসহ যাত্রীপ্রতি মাত্র সাড়ে ৩শ’। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে তাদের নয়টি বাস চলাচল করছে। পাবনার কাজিরহাট নৌরুট থেকে আবার তাদের একই পরিবহনে উত্তরবঙ্গের নির্দিষ্ট স্থানে যাতায়াতের জন্যে তাদের বাস রয়েছে। তবে যাত্রী সংখ্যা বাড়লে তাদের বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।   

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।