কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী মিলন। বাংলামোটর মোড় থেকে মগবাজারগামী রাস্তার ডান পাশে প্রায় ৫০টি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকান রয়েছে।
রাস্তাটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, সম্পূর্ণ ফুটপাত এবং রাস্তার অনেকাংশের উপর ব্যবসায়ীরা নিজেরদের যন্ত্রাংশ ও সার্ভিসিংয়ের দোকান বসিয়ে দখল করে রেখেছেন। এসব দোকানে প্রতিদিন শত শত প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চালকরা আসেন যন্ত্রাংশ কিনতে কিংবা সার্ভিসিং করাতে।
যন্ত্রাংশ কিনে চলে গেলে হয়তো যানজট সৃষ্টিতে তেমন একটা প্রভাব ফেলত না। বিপত্তি হয় যখন সার্ভিসিং করানো হয়। রাস্তার উপর মোটরসাইকেল ও কার পার্ক করে চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সার্ভিসিংয়ের কাজ। এতে নিউ ইস্কাটন মোড় থেকে বাংলামোটর সিগন্যাল পর্যন্ত রাস্তাটিতে সার্বক্ষণিক যানজট লেগেই থাকে।
ব্যবসায়ীরা শুধু রাস্তা দখল করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না। ব্যবসায় যেন কোনো অসুবিধা না হয় তাই রাস্তা ও ফুটপাতে খাড়া করে রড পুঁতে রেখেছেন যেন মানুষ হাঁটাচলা করতে না পারে!
সড়কটিতে থাকা খায়ের আটোমোবাইল দোকানের মালিক সৈয়দ মোহাম্মদ আরমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এভাবেই দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসছি। এখানে ব্যবসা করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায়ও নাই। আমাদের কোনো সমস্যা হলে মালিক সমিতি দেখে।
এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ফ্লাইওভার থেকে নেমেই রাস্তায় বিশাল যানজট। অবৈধ দখলের কারণে সবার প্রতিনিয়ত কষ্ট করতে হয়। দোকানিরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের কিছু বলতে পারে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, রাজধানীর ব্যস্ততম এমন একটি জায়গায় কীভাবে অবৈধভাবে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যবসা চলতে পারে!
প্রশাসনের গাফিলতির পাশাপাশি জনসচেতনতার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন অনেক যাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বা পুলিশের বড় কর্তাদের মতো নাগরিকরাও এ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে সার্ভিসিং করান বলে অভিযোগ করেন অনেকেই।
রাস্তা দখলের বিষয়টি নিয়ে বাংলামোটর সিগন্যালে কর্মরত সার্জেন্ট মুসা ও সার্জেন্ট কাউসারের সঙ্গে কথা হয়। বাংলানিউজে তারা জানান, রাস্তাটির যানজটের অন্যতম কারণ হলো রাস্তা ও ফুটপাতের অবৈধ দখল এবং রিকশা চলাচল। এখানকার ব্যবসায়ীদের গাড়ির পার্টস বিক্রির অনুমোদন থাকলেও সার্ভিসিংয়ের কোনো অনুমোদন নেই। কিন্তু তারা অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সার্জেন্ট কাউসারের বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তা দখলমুক্ত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ সিটি করপোরেশনের অধীনে। যেহেতু বাংলামোটর সিগন্যাল গুরুত্বপূর্ণ তাই আমরা মাঝে মধ্যে রাস্তা দখলমুক্ত করার জন্য অভিযান চালাই। কিন্তু দোকানিরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় ও বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে আমাদের উল্টো হ্যারাজমেন্ট করার চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এমএসি/এমজেএফ