ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খেলা, গান ও পেপারে কাটে শিক্ষার্থীদের রাতের প্রথমভাগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
খেলা, গান ও পেপারে কাটে শিক্ষার্থীদের রাতের প্রথমভাগ শিক্ষার্থীরা গিটার বাজিয়ে গান করছেন-ছবি-বাংলানিউজ

খুলনা: মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৯টা। খুলনা মহানগরীর কয়লা ঘাট সংলগ্ন সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের মজিদ ছাত্রাবাস গেটে মোটরসাইকেলের হর্ন বাজিয়ে একজন শিক্ষার্থী আসলেন। প্যান্ট হাঁটুর উপরে। নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলাম এ অবস্থা কেন। বললেন, ভাই ভেতরে আসেন, বলছি। ভেতরে ঢুকতেই ডান পাশে মসজিদ। মসজিদের পাশ থেকে হেঁটে সামনে ছাত্রাবাস ভবন। 

ভবনের প্রধান ফটকের সামনের মাঠে ১৫-২০ জন ক্রিকেট খেলছেন। তার একটু দূরে মাঠের কোণে কয়েকজন গিটার নিয়ে গান করছেন।

ভবনের ভেতরে ঢুকতেই হাতের ডানপাশে টেলিভিশন দেখা ও পেপার পড়ার কক্ষ। বাম পাশে রান্না ও খাবার কক্ষ। টিভি কক্ষে কয়েকজন টিভি দেখছেন। কেউ আবার পেপার পড়ছেন।

উঠলাম ৩য় তলায়। সেখানে কোনো কোনো কক্ষে কেউ কেউ পড়ছেন। আবার কোনো কক্ষে চলছে গ্রুপ স্টাডি। কোনো কক্ষে চলছে গল্প গুজব।

শিক্ষার্থীরা ক্রিকেট খেলছেন-ছবি-বাংলানিউজগিটার নিয়ে গান করা বিবিএ ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী দোলন খান বাংলানিউজকে বলেন, পড়ালেখার ফাঁকে অবসর সময়ে গান করি। সন্ধ্যার পরের সময়টা একটু আনন্দের জন্য গিটার বাজিয়ে গান করে সহপাঠীদের আনন্দ দেই। নিজের মনকে ভালো রাখি। একটু বেশি রাত হলে পড়া শুরু করি।

এমবিএ‘র শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান বলেন, টিভি দেখে ও পেপার পড়ে কাটে আমার অবসর সময়।

এইচএসসি শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান বলেন, বড় ভাইরা খুবই স্নেহ করে। সব সময় পড়াশোনায় সহযোগিতা করেন।

চলছে গ্রুপ স্টাডি-ছবি-বাংলানিউজঅরিন্দম, দিপঙ্কর সাহাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ছাত্রাবাসটি কলেজ থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কলেজে যেতে কষ্ট হয়। ছাত্রাবাসের মাঠে বৃষ্টির সময় পানি জমে যায়। একটি পুকুর আছে, তবে পুকুরটি খননের অভাবে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ছাত্রাবাস ঘেরা দেওয়ালে লাইট নেই। ছাত্রাবাসে বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, দারোয়ান, মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেনদের বেতন ভাতা শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হয়। অন্য ছাত্রাবাসে যা সরকারিভাবে দেওয়া হয়।

ছাত্রাবাস পরিচালক এমবিএ শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বাদশা বলেন, পরিবহন ও ছাত্রাবাসের সরকারি সুবিধার জন্য আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে। মাঠে বালু ভরাট, দেওয়ালে লাইট ও পুকুর খননের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরের কাছে আবেদন করা হলেও কোনো উপকার হয়নি।  

আরও পড়ুন>>
**যে কলেজে ক্লাস হয় রাতে...

কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কালীপদ মজুমদার বলেন, এইচএসসি, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর এ চার ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন বিভাগে ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে এখানে। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের একটিমাত্র ছাত্রাবাস আছে। যেখানে ২৪টি কক্ষে মাত্র ৯৬ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা আবেদন করেছি যাতে নতুন ছাত্রাবাস করা হয়।  

তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি ছাত্রীনিবাস করার জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই। যার জন্য আমরা একাধিকবার আবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রী বরাবরও আবেদন করা হয়েছে। আশা করি খুব শিগগির এসব সমস্যার সমাধান হবে। মজিদ ছাত্রাবাসে সরকারি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
আরআর

...

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।