এটা বোঝা গেলো ‘রোডওয়ে ডেক স্লাব’ দেখে। স্প্যানের ওপর কংক্রিটের তৈরি ডেক স্লাব বসানো হবে।
দুই মিটার চওড়া তিন হাজার ৭৫টি স্লাব প্লেট বসিয়ে ছয় হাজার ১৫০ মিটার লম্বা সেতু তৈরি করা হবে। পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর পর ডেক স্লাব বসালেই একটি সেতুর পূর্ণাঙ্গ সুপার স্ট্রাকচার কাঠামো হবে। এখন শুধু নদীর চার পিলারে দু’টি স্প্যান উঠিয়ে জোড়া লাগানো হয়েছে। যানবাহনের চাপ প্রথমে পড়বে এসব স্লাবে। স্লাব সাজিয়ে তার ওপর পিচঢালা সড়ক হবে।
দেখা গেছে, স্লাব এতোটাই চওড়া যে তার দুই ভাগ। মাঝখানে আইল্যান্ড। যার একেক ভাগে দু’টি করে লেন রয়েছে। স্প্যানের ওপর বসানোর পর প্রায় এক লেন সমান স্প্যানের দু’দিকের বাইরে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে।
মূল সেতুর একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী জানান, স্লাবগুলোতে ‘হেবি স্ট্রেস কংক্রিট’ দেয়া হবে। একসঙ্গে অনেকগুলো রড ঢুকিয়ে দেয়া হবে স্লাবের ভেতরে। রডগুলো হবে অনেকটা তারের মতো। এসব তারই স্লাবের মূল লোড নেবে। প্রকৌশলীদের ভাষায় এটাই ‘প্রি-স্ট্রেসিং’। প্রতিটি স্লাবে বিম থাকবে যাতে ভেঙ্গে না যায়। এসব স্লাব তৈরির সময যথেষ্ট পরিমাণ লোড দিয়ে পরীক্ষা করে নেয়া হয়।
জাজিরা ডেক স্লাব কারখানা থেকে জানা যায়, একদিনে ৪০ থেকে ৫০টি স্লাব তৈরি করা যায়। রেললাইনও করা হবে একই রকম স্লাব বসিয়ে। রেলের স্লাবগুলো রাখা হয়েছে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।
পদ্মাসেতু জাজিরা পাড়ের ৩৭, ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলার ঘুরে দেখা গেছে, ৩৭ ও ৩৮ এর মধ্যে প্রথম স্প্যান এবং ৩৮ ও ৩৯ এর মধ্যে দ্বিতীয় স্প্যান উঠিয়ে জোড়া লাগানো হয়েছে। তৃতীয় স্প্যান বসবে মার্চ মাসে ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারে।
সিঁড়ি বেয়ে স্প্যানের ওপর উঠে দেখা গেছে, প্রতিটি স্প্যানের ওপর স্লাব বসানোর জন্য রড বের করে রাখা হয়েছে। ক্রেনে টেনে স্লাব নিয়ে এসে সাজানো হলেই স্প্যানের ওপর সড়কপথ দেখা যাবে। আর নিচে একই ভাবে রেললাইনের স্লাব বসানো হবে। তাতে দৃশ্যমান হবে রেলপথ।
স্প্যান এবং স্লাব বসানো পদ্মাসেতুর সুপারস্ট্রাকচার বা উপরিভাগের অংশ। স্প্যান ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে ট্রাস জায়ান্ট দেয়ার পর স্প্যান তৈরি হয়। স্প্যান বসানোর পর তার ওপর সাজানো হবে রোডওয়ে ডেক স্লাব। পুরো কাঠামোকে একসঙ্গে বলা হবে সুপারস্ট্রাকচার।
পদ্মাসেতুর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান খ্যাতিমান প্রকৌশলী ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পদ্মায় কোনো কাজ আটকে নেই। নদীর গভীরে পাইল নিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জ ছিলো। দু’টি স্প্যান বসানোর পর তৃতীয় স্প্যান সাত থেকে আটদিনের মধ্যে পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা। আর ৩১ মার্চের মধ্যে অবশিষ্ট কিছু পাইলের চূড়ান্ত ডিজাইন না এলে কাজ আটকে থাকতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এসএ/এসআই
**পদ্মায় পাইল ড্রাইভ শ’ ছাড়ালো, নকশা ঝুলন্ত ২২ পিলারের