বর্তমান সংসদ ও বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, টক শো’তে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু তারা জানেন না, এই সংসদ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অনুসরণ করছে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় এসব কথা বলেন বিরোধী দলীয় নেতা।
রওশন এরশাদ বলেন, এই সংসদ প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। সবার মনে আছে কি অবস্থায় কোন সময় আমরা নির্বাচন করেছি। জাতীয় সংকট উত্তরণের জন্য আমাদের দলই তখন এগিয়ে এসেছিলো দেশ ও দেশের জনগণকে সাহায্য সহযোগিতা করতে। অতীতে যেসব সংসদ শেষ হয়েছে কোন বার কিন্তু শান্তিপূ্র্ণভাবে শেষ হয়নি। এবার শান্তিপূর্ণভাবে সংসদ শেষ হচ্ছে। হরতাল অবরোধের মুখোমুখি হতে হয়নি জনগণকে। টক শো’তে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু তারা জানেন না যে, আমরা ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে অনুসরণ করছি। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সিস্টেমে সরকারকে সহযোগিতা করে বিরোধী দল। কিন্তু তারা না বুঝে বিরোধী দলের সমালোচনা করছে।
বিরোধী দলীয় নেতা আরো বলেন, দেশে কিছু কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। প্রধানমন্ত্রী অনেক স্নেহশীল মহিলা। মায়ের দরদ দিয়ে সবকিছু সমাধানের চেষ্টা করেন। প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তারপরও তিনি যে চেষ্টা করছেন এটা যদি জনগণ জানতে পারে তাহলে তারা শান্তি পায়। আমাদের দেশের মানুষের চাহিদা অনেক কম। কিন্তু আমরা কি সেটা পূরণ করতে পারছি?
রওশন এরশাদ বলেন, অংক কষে কষে আমরা অনেক কিছু দেখাতে পারি। কিন্ত জনগণ দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখতে চায়। ব্যাংকিং খাতগুলোর কি অবস্থা তা সবাই জানেন। অর্থনীতির খাতে ধস নেমেছে। শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। অর্থমন্ত্রীর মতো এরকম যোগ্য মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্যাংকে এত বড় ধস নামলো কেন? শিক্ষা খাত ও শেয়ার বাজার দেশের জনগণের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গুরুত্ব সহকারে এ বিষয়গুলোর সমাধান করতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেখানে দেখেন কিভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা আছে। শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে অনেক কম অনুদান দেওয়া হয়। এতে উদাসীন থাকলে শিক্ষার উন্নয়ন হবে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস লেগেই আছে। সৌদি আরব থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। এ ধরনের অবস্থা দেশে বারবার কেন হচ্ছে? অনেকে প্রশ্ন করে শিক্ষা খাতে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মের কী হবে। এটা বন্ধ হবে কবে? সরকার কেন এটা বন্ধ করতে পারছে না? এখানে শিক্ষামন্ত্রীকে যদি এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তিনি কী জবাব দেবেন? সরকার যদি এক্ষেত্রে না পারে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিয়ে চেষ্টা করতে পারে। তারা কি এটা পারবে না? সাধারণ লোক তো প্রশ্নপত্র ফাঁস করে না। যারা প্রশ্নপত্র তৈরি করে তারা এটা ফাঁস করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এসকে/এসএম