ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেবায় দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসে অঞ্চলভিত্তিক এনআইডি ছাপবে ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
সেবায় দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসে অঞ্চলভিত্তিক এনআইডি ছাপবে ইসি

ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবায় দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনতে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে এনআইডি ছাপানো হবে। তবে এটি শুধুমাত্র হারানো বা নষ্ট হওয়া এনআইডি নতুন করে পাওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, কারো এনআইডি হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে, তাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পুনর্মুদ্রণের জন্য ‍আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে সেই আবেদন, জেলা, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় হয়ে ঢাকায় আসে।

কেন্দ্রে অনুমোদন হওয়ার পর ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে ছাপানো হয়। তারপর এটি একই কায়দায় ফের সংশ্লিষ্ট উপজেলায় পাঠানো হয়। যা সেবাগ্রহীতাকে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দেয়।
 
এনআইডি হারালে বা নষ্ট হলে যেহেতু আবার তোলার ক্ষেত্রে কোনো তথ্যের পরিবর্তন হয় না, তাই এ সংক্রান্ত আবেদনে তদন্তের প্রয়োজন নেই। তাই আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাই আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে পারেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন হারানো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া এনআইডি তোলার জন্য আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সহজীকরণ করার উপায় খুঁজতে গিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
 
জানা গেছে, এরইমধ্যে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আবেদন নিষ্পত্তির পর তার কার্যালয়েই এনআইডি প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা, থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেবেন। নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকেই এনআইডি পুনর্মুদ্রণের ক্ষমতা প্রদান করে।
 
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে এনআইডি ছাপানোর প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক এএসএম ইকবাল হাসান স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ১৩তম কমিশন সভায় এনআইডি পুনর্মুদ্রণের ক্ষমতা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রদান করা হয়। সে ‍অনুযায়ী, এনআইডি পুনর্মুদ্রণের নিমিত্তে ২টি প্রিন্টার, ২টি লেমিনেটিং মেশিন, ২টি কার্টিং মেশিন ও পাউচ ক্রয়ের জন্য প্রত্যেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার অনুকূলে ১ লাখ বিশ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সে টাকা দিয়ে ইসির নির্দেশিত কনফিগারেশন অনুযায়ী উপকরণ কেনার জন্য নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
 
এ বিষয়ে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন থেকে হারানো কার্ড তোলার জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। আমরা আঞ্চলিক কর্মকর্তার মাধ্যমেই নাগরিকদের নতুন করে কার্ড ছাপিয়ে দেবো। এতে দীর্ঘসূত্রতা কমে যাবে।
 
‌আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে যে এনআইডি দেওয়া হবে, তা স্মার্টকার্ড নয়। এটি কাগজের ওপর ছাপানো লেমিনেটিং কার্ড। স্মার্টকার্ড ঢাকাতেই ছাপানো হবে। এছাড়া তথ্য সংশোধন সংক্রান্ত যে কোনো আবেদন নিষ্পত্তির পর নতুন করে ছাপানোর প্রয়োজন হলেও সেটাও ঢাকাতে হবে।
 
২০০৭ সাল থেকে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৬ সাল থেকে দেওয়া শুরু করেছে স্মার্টকার্ড। তবে এখনো গ্রামে গ্রামে পোঁছাতে পারেনি স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম। তাই এ সময় অনেকেই কার্ড হারানোর ঘটনা বা নষ্ট হওয়ার পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। তাই স্মার্টকার্ড পরে দেওয়া হলেও আপদকালীন সময়ের জন্য আবারো সেই পুরনো এনআইডি সরবরাহ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নাগরিককে ব্যাংকে ফি জমা দিয়ে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন দাখিল করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।