ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাপানের সহায়তায় ইউএনডিপির সুনামি প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৮
জাপানের সহায়তায় ইউএনডিপির সুনামি প্রস্তুতি জাপানের সহায়তায় ইউএনডিপির সুনামি প্রস্তুতি

কক্সবাজারঃ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল সুনামির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু এনিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের বিশেষ করে শিশুদের তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। বেশির ভাগ মানুষ সুনামি ও এর ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কেও সচেতন নয়।

আর এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় কক্সবাজার জেলায় সুনামি ঝুঁকিতে থাকা বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সুনামি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে, ১ মার্চ একটি মহড়ার আয়োজন করে।

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ভূমিকম্প যে সুনামির অবতারণা ঘটায়, তাতে প্রায় দু’লাখ ত্রিশ হাজার মানুষ প্রাণ হারান৷ ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই সুনামির পর, এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে, ইউএনডিপি, জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১৮টি দেশে, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সুনামি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে ।

তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সাথে, ইউএনডিপি, কক্সবাজার ও মহেশখালীতে প্রাথমিক ভাবে সুনামি ঝুঁকিতে থাকা পাঁচটি স্কুল চিহ্নিত করে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ১ মার্চ, কক্সবাজারের দক্ষিণ খুরুশকুল ধীরেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুনামি সচেতনতা বাড়াতে একটি মহড়ার আয়োজন করা হয়, যাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ।

তার বক্তব্যতে তিনি বলেন, ‘সুনামি বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন একটি দুর্যোগ৷ ২০০৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশের মানুষরা এর সঙ্গে পরিচিত৷ সুনামির ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং এই বিষয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের সচেতন করতে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে । উপকূলবর্তী অঞ্চলে সাইক্লোন সেন্টার ছাড়াও উপকূলে বাধ তৈরী করা  রয়েছে৷এছাড়াও আবহাওয়া ও দুর্যোগ বার্তা যে কোনো সময় জানার জন্য ১০৯০ একটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি জাপান সরকার ও ইউএনডিপির সহায়তায় বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মহড়ার আয়োজন রয়েছে। আমাদের এই কার্যক্রম আশা করি ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে । ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল জানান, উপকূলের অধিকাংশ মানুষ সুনামির নাম শুনেনি। উপকূলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও কৃষি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত লোকজনকে ভবিষ্যৎ বিপদ থেকে বাঁচাতে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, ‘সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শিশুদের বাঁচানোর জন্য জাপান সরকারের সহায়তায় স্কুল ভিত্তিক ‘সুনামি ' বিষয়ক সচেতনমূলক মহড়া অব্যাহত রেখেছে ইউএনডিপি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে সুনামি কবে হবে আমরা জানি না, কিন্তু আমরা জানি বাংলাদেশ সুনামি ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ, এবং উপকূলীয় অঞ্চল সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হবে যদি সুনামি আঘাত করে। এই কারণে আমরা আগে থেকে যেন প্রস্তুত থাকতে পারি, সেই কারণেই আমাদের এই উদ্যোগ’।

সভায় অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে আরো ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কান্ট্রি ডিরেক্টর, খুরশীদ আলম, প্রোগ্রাম এনালিস্ট আরিফ আব্দুল্লাহ খান, জাইকার নাওকি মাৎসুমারা, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারের (বিডিপিসি) পরিচালক সাইদুর রহমান, ডঃ মুহাম্মদ শাহ আলম ও ডঃ মোহাম্মদ আসাদ হুসাইন, অধ্যাপক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, ০১ মার্চ, ২০১৮
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।