শুক্রবার (২ মার্চ) দুপুরে রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রামপুরা ব্রিজের উত্তর-দক্ষিণ দুই দিকেই যানজট। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ব্রিজের উত্তরে হাতিরঝিল পয়েন্টে আর দক্ষিণ দিকে হাজিপাড়ায় রাস্তা ভাঙা।
হাজিপাড়ার বাসিন্দা রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, হাজিপাড়া পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে মালিবাগ আবুল হোটেলের মোড় পর্যন্ত রাস্তা ভাঙা। এজন্য রামপুরা ব্রিজ থেকে একটু দক্ষিণে রামপুরা বাজার পার হলেই যানজট শুরু হয়। অপরদিকে রামপুরা ব্রিজের উত্তর দিকে হাতিরঝিল ক্রসিংয়ের ওখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। এর সঙ্গে হাতিরঝিল থেকে গাড়ি এসে রামপুরার দিকে যাওয়ার ক্রসিংয়েও লাগে দীর্ঘ যানজট।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে চলে মৌচাক-মালিবাগ-ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ। অপরদিকে মালিবাগ রেলগেট থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সড়কটি ছিল ভাঙাচোরা। দীর্ঘ সময় ধরে ওয়াসার পাইপ বসানো হয় ওই সড়কের মাঝখানে। এরপর সংস্কারে চলে ধীরগতি। মাস খানেক হলো আংশিক কার্পেটিং করা হয়েছে। এখনো রাস্তার দুই পাশে কার্পেটিং বাকি। অপরদিকে হাজিপাড়া থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত পুরোটাই ভাঙাচোরা রয়ে গেছে। সেজন্য রামপুরা ব্রিজ থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত যানজটের সঙ্গে রয়েছে ধুলাবালিও।
সরজমিনে ঘুরে রামপুরা এলাকার ভেতরের বেশকিছু রাস্তার অবস্থাও খারাপ দেখা যায়। টিভি ভবনের দক্ষিণ ওয়ালের পাশ ঘেষে একটি রাস্তা বনশ্রী আবাসিকের এ-ব্লকের দিকে গেছে। সেটিও ধীর গতিতে সংস্কার চলছে। সেখানে এখন কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। রাস্তাটির দুই পাশে রয়েছে কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানা।
রামপুরা ব্রিজ থেকে আর একটি রাস্তা খাল বরাবর পূর্বদিকে চলে গেছে। এর উত্তর পাশে বনশ্রী আবাসিক এলাকা। রাস্তাটি মেরাদিয়া হয়ে ডেমরা সুলতানা কামাল সেতুর সঙ্গে মিশেছে। এ রাস্তায় প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি চলাচল করে। গত তিন বছর ধরে রাস্তাটির বেহাল দশা।
বনশ্রী সি-ব্লকের বাসিন্দা জসিম বাংলানিউজকে বলেন, এ রাস্তা দিয়ে এখন চলাচলের কোনো উপায় নেই। কিছুদিন আগে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এতে ভোগান্তি আরো বেড়েছে। তবে এই ভোগান্তি কতদিনে শেষ হবে জানি না।
টিভি সেন্টারের সামনের ইউ লুপ সম্পর্কে জসিম বলেন, রাজউকের নির্মিত ইউ লুপটির উপরে গিয়ে দেখেন সেখানে কী অবস্থা।
জসিমের কথা মতো সেখানে গিয়ে দেখা গেলো, ইউ লুপের উপরে প্রচুর বালুর স্তূপ। মাঝখানে যেখানে গাড়ি চলে সেখানে পরিষ্কার থাকলেও দুই পাশে ২/৩ ফিট জায়গায় বালুর মোটা স্তূপ পড়ে গেছে।
পশ্চিম রামপুরার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাড়ি রামপুরা মেইন রাস্তার পাশে। দীর্ঘ ভোগান্তির পর সম্প্রতি রাস্তাটির আংশিক কার্পেটিং করা হয়েছে। তবে পুরোপুরি কার্পেটিং না হওয়ায় ভোগান্তি এখনো শেষ হয়নি। সামনে বর্ষাকাল। এরমধ্যে পুরো রাস্তার সংস্কার না হলে চলাচল করা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, রামপুরা বাজার থেকে হাজিপাড়া পর্যন্ত কার্পেটিং করা হলেও কয়েকদিন হলো আবার নতুন করে পাইপ বসানোর জন্য কাটা হচ্ছে। এতদিন ওয়াসার পাইপ বসিয়েছে, এখন ক্যাবলের জন্য পাইপ বসানো হচ্ছে। এতে ধুলাবালি আবারো বেড়ে গেছে। যানজট আর ধুলাবালি রামপুরাবাসীর নিত্যসঙ্গী।
এদিকে মেরুল বাড্ডা আর দক্ষিণ বাড্ডার মধ্যবর্তী স্থানে দীর্ঘ সময় ধরে নির্মাণ করা হচ্ছে ইউ লুপ। গত নভেম্বরে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। ফলে মেরুল বাড্ডা ও দক্ষিণ বাড্ডা এলাকায়ও সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ