ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু নাঈমের মাথার পেছনে যেন আরেক মাথা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৮
শিশু নাঈমের মাথার পেছনে যেন আরেক মাথা! শিশু নাঈম

নড়াইল: নাঈম বয়স মাত্র ১৪ মাস। ছোট এই শিশুটি তার ঘাড়ে বয়ে বেড়াচ্ছে তিন কেজি ওজনের টিউমার। যতো দিন যাচ্ছে ততো বড় হচ্ছে টিউমারটি। এ ভারে মাথা সোজা রাখাও কষ্ট তার জন্য।

শিশুটিকে দেখলে মনে হবে যেন মাথার পেছনে আরেকটি মাথা! কোমলমতী এই শিশুটি টিউমারের ওজন সহ্য করতে না পেরে ছটফট করে। কিন্তু দরিদ্র দিনমজুর বাবা টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের রামেশ্বর গ্রামের দিনমজুর বাবার ঘরে জন্ম নাঈমের। ঘাড়ে ছোট টিউমারটি নিয়েই  পৃথিবীতে আসে সে। দিন দিন সেই টিউমারটি বড় হতে থাকে। অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোনো কাজ হয়নি। ধীরে ধীরে বড় হয়ে গেছে টিউমারটি। বর্তমানে শিশুটির ঘাড়ের টিউমারের ওজন প্রায় ৩ কেজি। ছোট এই শিশুটির পক্ষে এত বড় টিউমারের ভার সহ্য করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।  

দিনমজুর বাবা-মায়ের ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে শিশুটির অপারেশন করাতে পারছেন না। কারণ অপারেশনের জন্য অনেক টাকা দরকার। এতো টাকা যোগাড় করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
 
শিশুটির বাবা দিনমজুর কামাল জানান, পরের ক্ষেতে কাজ করে পাঁচ সদস্যের সংসার চালান তিনি। যেদিন কাজ করতে পারেন না সেদিন তার ঘরের চুলাও জ্বলে না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-কর্জ করে ১৪ মাস ধরে চিকিৎসা করিয়েছেন সন্তানের। কিন্তু এখন আর পারছেন না।  

তিনি জানান, কিছুদিন আগে নাঈমকে নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন সেখানকার চিকিৎসক ওকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে দেখাতে বলেছেন। তখন ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন এই টিউমার অপারেশন করতে লাখ টাকার বেশি খরচ হবে। বর্তমানে এতো টাকা যোগাড় করা তার (পরিবারের) পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি সন্তানের চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

নাঈমের মা জানান, তার বড় ছেলে জিহাদ (৭) স্কুলে যায়। আর ছোট ছেলে নাঈম, টিউমার নিয়েই জন্ম হয় তার। জন্মের পর থেকে সাধ্যমত চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন আর ডাক্তার দেখানোর মতো টাকাও নেই তাদের। চলতি সপ্তাহে তারা নাঈমকে নিয়ে ঢাকায় যেতে চান। কিন্তু টাকার অভাবে তাও হচ্ছে না। এ অবস্থায় হৃদয়বানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।  

তিনি আরও জানান, এতো ছোট শিশুর পক্ষে এত বড় টিউমারের ভার সহ্য করা খুব কঠিন। চোখের সামনে যখন তাকে কষ্টে ছটফট করে দেখেন তখন তিনিও চিৎকার করে আল্লাহকে ডাকতে থাকেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।