ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনার শিকার অর্ধেকই পথচারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৮
সড়ক দুর্ঘটনার শিকার অর্ধেকই পথচারী সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: দেশে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়া মানুষদের অর্ধেকই সাধারণ পথচারী। অসতর্কভাবে সড়কে হাঁটা, পারাপার, হাট-বাজার বসানো, সড়কের পাশে স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে সাধারণ পথচারীরা সড়ক দুর্ঘটনায় সব থেকে বেশি শিকার হয়ে থাকে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনাকে জাতীয় অভিশাপ বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।

শনিবার (০১ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’ সংগঠনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘নিসচার ২৫ বছর: প্রেক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডক্টর শামসুল হক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, গাজী টিভির প্রধান সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, হাইওয়ে পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান প্রমুখ।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমাদের দেশের সড়কের নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। সড়ক যথেষ্ট চওড়া নয়। রাস্তার উপর দোকান, জনসংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের দেশের হাইওয়ে গুলো দেখা যায় দুই লেনের। কিন্তু হাইওয়ে চার লেনের হতেই হবে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, আমাদের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়নি আমাদের যার যার জায়গা থেকে যা যা দায়িত্ব সেগুলো পালন করলেই আমাদের সড়কের চিত্র পাল্টে যাবে।  

সেমিনারে জানানো হয়, গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনার হার নিম্নগতিতে ছিল। তবে ২০১৭ সালের পর ঊর্ধ্বমুখী হয়। ২০১৫ সালে দুই হাজার ৬২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার তিনজন নিহত এবং ছয় হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে দুই হাজার ৩১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় চার হাজার ১৪০ জন নিহত এবং পাঁচ হাজার ৩২৫ জন আহত হয়েছে।

এদিকে ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৩৪৯টি। এতে পাঁচ হাজার ৬৪৫ জন নিহত এবং সাত হাজার ৯০৮ জন আহত হয়েছে। অর্থাৎ ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৩৯ দশমিক তিন শতাংশ বেশি। আর চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা তিন হাজার ১৩৩টি। এতে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ৯৫১ জন এবং আহত হয়েছে সাত হাজার ৭৪৯ জন। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পথচারীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। শুধু ২০১৭ সালেই এক হাজার ৯৬৪টি দুর্ঘটনায় পথচারী হিসেবে নিহত হয়েছে দুই হাজার ৮০৪ জন।
 
সংগঠনটির  রজত জয়ন্তী উপলক্ষে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ভূমিকা রাখার জন্য আট জন ব্যক্তিকে সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। এদের মধ্যে নওগাঁর মান্দায় ২০ বছর ধরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ট্রাফিক সদস্য হিসেবে কাজ করার জন্য আজহার মন্ডলকে, বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক সালাহ উদ্দিনসহ সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকার মুস্তাফা সাউদ, মরহুম চলচ্চিত্র নির্মাতা শিবলী সাদিক, সাবেক সচিব আইয়ুবুর রহমান খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সাবেক সচিব ও বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান এবং দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
এসএইচএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।