ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত .

ঢাকা: প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে স্থায়ী মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম রেজুলেশনটি উপস্থাপন করেন। 

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব উপস্থাপনকালে উপস্থায়ী প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত মূল্যবোধ ও নীতিসমূহের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছে এবং শান্তির সুরক্ষা ও প্রসারে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়টিতে সর্বদাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি সমাজের সকলকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন।

‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনের ২০ বছর পূর্তির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশনটির ২০তম বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য ৭৩তম সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্টকে ওই তারিখে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আয়োজনের জন্য এবারের খসড়ায় অনুরোধ জানানো হয়েছে।

‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে সদস্য দেশসমূহের অংশীদারিত্বভিত্তিক যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, ২০ বছর পূর্তি উদযাপনে এ অনুষ্ঠানে তা পুনঃনবায়নের সুযোগ এনে দেবে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন উপস্থায়ী প্রতিনিধি।

উপস্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, সব মানুষই ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রত্যাশী। আর শান্তির সংস্কৃতির বিকাশ ও চর্চার মাধ্যমেই বিভেদ এবং বিভাজনের মতো বিষয়গুলোর সৃজনশীল সমাধান করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে শান্তির সংস্কৃতি ধারণাটি প্রথম উপস্থাপন করে যা সাধারণ পরিষদে রেজুলেশন হিসেবে পাস হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে 'শান্তির সংস্কৃতি দশক' বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ রেজুলেশনটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে যা প্রতিবছরই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হচ্ছে।

এই প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা সমাজ থেকে দূরীভূত হলে বিশ্বে শান্তি দীর্ঘায়িত ও সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। ’ এবারের রেজুলেশনে সন্ত্রাস মোকাবিলা, শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি নিশ্চিতকরণে ‘শান্তির সংস্কৃতি’র অবদানের বিষয়টি স্বীকৃত হয়েছে; এছাড়াও এতে শিশু ও যুবদের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে তারা শান্তি, সহিষ্ণুতা, উদারতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মতো মানবিক গুণের চর্চার মাধ্যমে সমাজে শান্তির সংস্কৃতি বিকাশে আরও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হতে পারে। সব সদস্য রাষ্ট্রই প্রস্তাব বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০১টি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশন কো-স্পন্সর করেছে। বিশ্ব ব্যবস্থায় নানামুখী টানাপোড়েন সত্ত্বেও বিশাল এ সমর্থন এটাই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের প্রস্তাবনার প্রতি বিশ্ববাসীর গভীর আস্থা অটুট আছে এবং বিশ্ব উন্নয়নে সব মানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য শান্তির সংস্কৃতির বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
টিআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।