কেউ কেউ মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দ অনুযায়ী নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। হাসিনা সরকারের এই মন্ত্রিসভা হয়েছে অনেকটাই হালকা পাতলা গড়নের।
রোববার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা ও দফতর বণ্টনের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।
সোমবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবনে তাদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
পড়ুন>> কে কোন মন্ত্রণালয়ে
নতুন মন্ত্রিসভার বিষয়ে বেসরকারি নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজ রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তরুণরা দেশের প্রাণ। আওয়ামী লীগ ভিশন-২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সামনে নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন ও ভিশন-২০২১, ২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে তাই প্রয়োজন ছিলো তারুণ্য নির্ভর কেবিনেট। যারা সারাক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালনে রাত-দিন কাজ করবেন। এজন্য দরকার ছিলো এনার্জি ও সমসাময়িক জ্ঞান সম্পন্ন কেবিনেট। আমার মনে হয় এই কেবিনেট তেমনই হয়েছে। নতুন মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠ থেকে মাঠে দৌড়াতে পারবেন বলেই মনে হচ্ছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনির্ভাসিটির অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সুমনা হাসনাত বলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে বড় চমক ও দেশবাসীর জন্য উপহার হলো বিতর্কিতদের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ। এজন্য শেখ হাসিনা অভিনন্দন পেতেই পারেন। কারণ তিনি অন্তত আমাদের কথা চিন্তা করছেন এবং শাজাহান খানকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়েছেন।
‘সড়ক দুর্ঘটনা বিরোধীসহ বিভিন্ন আন্দোলনে শাজাহান খান সব সময়ই গণদাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবিকে পরিহাস করে আগের সরকারকে বিতর্কিত ও বিব্রত করেছিলেন,’ যোগ করেন তিনি।
নতুন মন্ত্রিসভায় কয়েকজন অভিজ্ঞর সঙ্গে তারুণ্য নির্ভর বিষয়টি আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক হবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী নিয়াজ আহমেদ মঞ্জু।
‘এর বড় উদাহরণ আগের মন্ত্রিসভার তরুণ সদস্যরা। জুনায়েদ আহমেদ পলক, শাহরিয়ার আলমরা শেখ হাসিনার মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই কারণে তিনি এবার এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান নওফেল, জাহিদ আহসান রাসেলদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন। ’
অনেকেই বলছেন নতুন মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনা ভারসম্য এনেছেন ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপুমণি, ড. আব্দুর রাজ্জাকদের ফিরিয়ে এনে এবং পলক, শাহরিয়ার আলমদের ধরে রেখে। সেই সঙ্গে এবার দলের তিনজন তরুণ সাংগঠনিক সম্পাদককে কেবিনেটে স্থান দেওয়া হয়েছে। এটা দলের তৃণমূলকে আরো সুসংহত ও সুসংগঠিত করবে।
পড়ুন>> নতুন মন্ত্রিসভায় নেই রাজনীতির প্রভাবশালীরা
তবে রাজধানীর একটি সরকারি কলেজের শিক্ষক নুরুল ইসলাম মজিদ বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভা গঠনে সবচেয়ে বড় চমক ছিলো দলের প্রভাবশালী এবং হেভিওয়েটদের বাদ দেওয়া। এটা কোনো সহজ বা সাধারণ ঘটনা নয়। আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করা সত্যিই সাহসের ব্যাপার।
অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুর মতো প্রভাবশালী জোট শরিকদের বাদ দেওয়াও কম চমক নয় বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৯
আরএম/এমএ