সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ।
প্রথমে গার্মেন্টস মালিকপক্ষ ও পুলিশের আশ্বাস সত্ত্বেও শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।
দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের সামনে থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যরা উত্তরার দিকে এগুতে থাকে। আর সামনের শ্রমিকরা পিছু হটতে থাকেন। এভাবে উত্তরার জসীমউদ্দীন মোড় পর্যন্ত এগিয়ে পুরো সড়ক থেকে শ্রমিকদের হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
সঙ্গে সঙ্গে পুরো সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং কোথাও শ্রমিকদের আর অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, কোনো ধরনের সংঘর্ষ ছাড়াই শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। এখন পুরো সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিকসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ঘটনায় কোনো শ্রমিকের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি তবে সকালের শুরুতে দক্ষিণখানের সংঘর্ষের ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস শ্রমিকরা উত্তরার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নিলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরো এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যে দুপুর ২টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বরের সামনে এনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় শ্রমিকরা।
ওই সময় নিপা গার্মেন্টসের মালিক খসরু চৌধুরী পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, সরকারের নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী আপনাদের বেতন দেওয়া হবে, তা গত কয়েকমাস ধরেই বলা হচ্ছে। আপনারা নতুন কাঠামোতেই বেতন পাবেন। তাই আন্দোলন না করে আপনারা কাজে ফিরে যান।
‘নতুন কাঠামোতে কেউ বেতন দিতে না পারলে গার্মেন্টস বন্ধ করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রিম এক মাসের বেতনও নিশ্চিত করা হবে। ’
ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, সরকারি বেতন-ভাতার জন্য শ্রমিকদের যে দাবি আমরা তার পক্ষে রয়েছি। তবে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো জ্বালাও-পোড়াও করা হলে আমরা পক্ষে থাকবো না। শ্রমিকদের বলবো, আপনারা কাজে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন, সমস্যা সমাধানে আমরা আপনাদের সহায়তা করবো। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে, আমরা আপনাদের পক্ষে থাকবো না।
এর আগে সকালে দক্ষিণখানের চালাবন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর উত্তরার মূল সড়কে অবস্থান নেন শ্রমিকরা।
পুলিশ সূত্র জানায়, বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা প্রায় পুরো উত্তরা এলাকার সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়।
এদিকে, রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় পুরো সড়কে জটলা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
রোববার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে উত্তরার জসীমউদ্দীন, আজমপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ ও মালিকপক্ষের মধ্যস্থতায় দুপুর ২টার দিকে সড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের জন্য সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করলেও মালিকপক্ষ তা দিচ্ছে না। এর দাবি জানালেও উল্টো হুমকি-ধমকি দেয় তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
পিএম/ওএইচ/