নেত্রকোনা শহর ঘুরে দেখা যায়, তীব্র শীতে সচ্ছল মানুষগুলো আগেভাগে ঘরে ফিরতে পারলেও পেটের দায় এবং রোজগারের আশায় ফিরতে পারেন না স্বল্প আয়ের মানুষেরা।
তারা নিজেদের ও পরিবারের কথা ভেবে কুয়াশা ও শীতে অমানবিক কষ্ট করে রোজগারের জন্য নির্ঘুম সারা রাত সড়কে পড়ে থাকেন।
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজগার কমে গেছে জানিয়ে নিজেদের সংগ্রামী জীবনের কথাগুলো বাংলানিউজের কাছে তুলে ধরেছেন স্বল্প আয়ের এসব মানুষ।
রিকশাচালক তোতা ও আল-আমিন বলেন, দিনে অতিরিক্ত যানবাহনের জন্য শহরে তীব্র যানজট লেগে থাকায় আয়-রোজগার ভালো হয় না। তার মধ্যে নানা কারণে জরিমানাও গুনতে হয়। এজন্য সন্ধ্যার পর থেকে রিকশা নিয়ে সড়কে নামেন তারা। লক্ষ্য থাকে শহরে আসা দূরপাল্লার বাস, ট্রেনসহ অন্যান্য বাহনের যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া।
এসব যাত্রীদের রিকশায় তুলে দিনের চেয়ে রাতেই রোজগার ভালো হয়। কিন্তু সম্প্রতি যাত্রীর দেখাও মিলছে না তেমন! হঠাৎ দু-একজন যাত্রীর দেখা মিললেও তীব্র শীতে রিকশা চালাতে পারছেন না তারা। শীতের দাপট থেকে নিজেদের রক্ষায় রাত জেগে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে হয়।
একই সমস্যায় ধুঁকছেন চা দোকানদার ও পিঠা বিক্রেতারা। পিঠা, ডিম বা চা গরম রাখতে রাত জেগে তারা লাকড়ি পুড়াচ্ছে ঠিকই কিন্তু রোজগার হচ্ছে না।
পিঠা বিক্রেতা মিনা ও রহিমা বলেন, রাত্রিকালীন ট্রেন-বাসগুলোর যাত্রী পেলে প্রচুর পিঠা ও ডিম বিক্রি হতো। বাস বা ট্রেন এখনও আসে প্রতি রাতেই। তবে যাত্রী নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে গভীর রাতে ডিম ও পিঠা খাওয়া মানুষের দেখা মিলে না।
তারা আরও বলেন, আয়-রোজগার ভালো হলে রিকশাচালকরা দলবদ্ধ হয়ে ডিম ও পিঠা খেতে আসেন। রোজগার কমে যাওয়ায় তারাও আজকাল চা বা পিঠা খেতে আসেন না। রাতভর আগুন জ্বেলে শুধু বসে থাকে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯
জিপি