রোববার (১৩ জানুয়ারি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্পকে আরো দৃশ্যমান করতে এডিপিতে ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় চীন থেকে নির্মাণসামগ্রীর দুটি বড় জাহাজ ইতোমধ্যে এসেছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেলটির নির্মাণকাজ শেষ হলে বদলে যাবে চট্টগ্রামের চিত্র। নগরটি বিস্তৃত হওয়া ছাড়াও আমূল পরিবর্তন আসবে অর্থনৈতিক আঙিনায়। বৃদ্ধি পাবে বন্দরের সক্ষমতা। প্রতিষ্ঠিত হবে বহুমুখী যোগাযোগব্যবস্থা। ফলে চাপ কমবে নগরের ওপর। এ লক্ষ্যে টানেলের কাজ এগিয়ে নিতে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে ২৮৫ কোটি টাকা। এডিপিতে টানেল নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৯০৫ কোটি। এখন বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ওবায়দুল হক বলেন, সাময়িকভাবে আমাদের সেতু বিভাগের প্রকল্পের বরাদ্দ কমতে ও বাড়তে পারে। আমরা এই বছরে যে পরিমাণ খরচ করতে পারব সেটাই রেখেছি। এতে কোনো সমস্যা দেখছি না। খরচ না করতে পারলে টাকা রেখে লাভ কি? তবে পরের বছর আরো বেশি খরচ করব। সঠিক সময়েই স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়িত হবে। ’
এছাড়াও সেতু বিভাগের ‘সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ছে ৬১৬ কোটি টাকা। এডিপিতে ৪৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ১০১ কোটি টাকা।
চূড়ান্ত নকশা অনুমোদনের পর ‘ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করেছে সেতু বিভাগ। উড়াল সড়কটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড- চন্দ্রা ইন্টারসেকশনে শেষ হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য হবে ২৪ কিলোমিটার। উভয় পাশে চার লেনের ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কও নির্মিত হবে। এই প্রকল্পেরও বরাদ্দ কমছে। প্রকল্পের আওতায় এডিপিতে মোট বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। অথচ সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দাঁড়াচ্ছে মাত্র ৩০৫ কোটি টাকা। ফলে বরাদ্দ কমছে ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ঢাকা-জয়দেবপুর রাজধানী শহর ঢাকায় আগমন ও বর্হিগমনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেকশন। জনবহুল এ শহরে জনসংখ্যার পাশাপাশি বাড়ছে যানবাহনের চাপ, যানজট। এ চাপ কিছুটা কমাতে ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে মাটির নিচ দিয়ে রেলপথ করার উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এ সেকশনের কমলাপুর-টঙ্গী রুটের নিচে কোনো ইউটিলিটি সার্ভিস কার্যক্রম না থাকায় এ অংশে মাটির নিচে সাবওয়ে (পাতাল রেল) নির্মাণ অনেকটা ঝামেলামুক্ত।
এরইমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-জয়দেবপুর সেকশনে সাবওয়ে নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ সাবওয়ে হবে ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত। নির্ধারণ করা হয়েছে সমীক্ষা প্রকল্পের ব্যয় এবং পরামর্শকের ব্যয়ও। এডিপিতে প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৮০ কোটি ৭২ লাখ টাকা। তবে সংশোধিত এডিপিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩ কোটি টাকা। ফলে ঢাকা শহরে পাতাল রেল নির্মাণে ২৩ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমআইএস/এমএএম/এমএইচএম