টিপু মুনশি বলেন, টঙ্গী এবং গাজীপুরের শতভাগ পোশাক কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
সোমবার (১৪ জানুযারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের আন্দোলনে নিহত শ্রমিকের পরিবার সরকারের নিয়ম অনুসারে ক্ষতিপূরণ পাবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে নিহতের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেবো।
পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ শ্রমিকদের ৬ গ্রেডের বেতন সমন্বয় করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মজুরি কাঠামোর ৭ গ্রেডের মধ্যে ৬ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ বেতন বেড়েছে ৫২৫৭ টাকা, সর্বনিম্ন বেড়েছে ২৭০০ টাকা।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পোশাক শ্রমিকরা জানুয়ারি মাসের বেতন নতুন মজুরি কাঠামো অনুসারে পাবেন। নতুন মজুরি কাঠামো অনুসারে ডিসেম্বর মাসে যে পরিমাণ টাকা কম পেয়েছেন, তাও জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আগামী দুই এক-দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে। এছাড়া আন্দোলনে যারা ভাঙচুর করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা উচিত।
বিগত কয়েকদিনের আন্দোলনে যে ক্ষতি হয়েছে শ্রমিকরা সবাই উদ্যোগী হয়ে কাজ করে পুষিয়ে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি জেনেছি আশুলিয়ায় ৩০টির মতো কারখানায় শ্রমিকরা সোমবার কার্ড পাঞ্চ করে চলে গেছেন, কাজ করেননি। তারা সড়কে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন বলেও জেনেছি। শিল্প পুলিশ তাদের তুলে দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গতকাল যে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রমিকরা মেনে নেবেন ও কাজে যোগ দেবেন।
শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেরও সমালোচনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বেতন কাঠামো নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য সঠিক হয়নি। তার বক্তব্য শ্রমিকদের উসকে দেওয়ার শামিল। মালিকরা সর্বনিম্ন বেতন সাড়ে সাত হাজার টাকা দিতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী সর্বনিম্ন বেতন আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন। সেক্ষেত্রে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যটি ঠিক না।
এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মনশি বলেন, তৈরি পোশাক হচ্ছে প্রধান রফতানি খাত। রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশ এই খাত থেকেই আসে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে রানা প্লাজা ধসের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এখাতে নজরদারি করে থাকেন। তার ওপর সকলের আস্থা রয়েছে। এজন্য বেতন কাঠামো ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া। তারই পরামর্শে বেতন কাঠামো ঠিক করা হয়েছে।
নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে সপ্তাহখানেক ধরে আন্দোলন ও বিক্ষাভ কর্মসূচির পর সোমবার কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। এদিন সকাল থেকেই কারখানায় যেতে দেখা যায় কর্মীদের। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় কিছু গার্মেন্টস বন্ধ থাকলেও মাঝারি ও বৃহৎ আকারের ফ্যাক্টরিগুলোর বেশিরভাগেই ছিল কর্মীদের উপস্থিতি।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোথাও শ্রমিক আন্দোলন বা বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। দুপুরের বিরতিতে শান্ত ও স্বাভাবিক পরিবেশে কর্মীদের ফ্যাক্টরি থেকে বাসায় যেতে দেখা গিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
জিসিজি/এমজেএফ