উপজেলার রিচি ইউনিয়নের জালালাবাদ নোয়াগাঁও গ্রামের শাকীল মিয়া মাছটি নিয়ে মেলায় এসেছেন। পইল নতুন বাজারের মাছের মেলায় ৩ শতাধিক বিক্রেতা মাছ নিয়ে এলেও ৩৫ কেজির বাঘাইড় মাছটি মেলা মাত করে রেখেছে।
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে পইল মাছের মেলায় মাছটি নিয়ে তিনি আসেন। শুরু থেকেই তিনি এর দাম হাকছেন ৫৫ হাজার টাকা। কয়েকজন ক্রেতা দাম বলেছেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তবে পছন্দমত দাম না পেলে মাছটি বিক্রি করতে নারাজ শাকীল মিয়া।
তিনি আরো জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার সিলেট এলাকায় কুশিয়ারা নদী থেকে মাছটি বড় জাল দিয়ে ধরেন স্থানীয় জেলেরা। গত রাতেই তিনি সেখান থেকে এটি কিনে নিয়ে এসেছেন। সন্ধ্যার মধ্যে মাছটি বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
সরেজমিনে মেলায় ঘুরে আরো ৩টি বাঘাইড় মাছের দেখা পাওয়া যায়। একটি নিয়ে এসেছেন লামা পইল গ্রামের মিন্নত আলী। মাছটির ওজন ৩০ কেজি। দাম হাকছেন ৪০ হাজার টাকা। কয়েকজন ক্রেতা এর দাম করেছেন ২৫ হাজার টাকা। মেঘনা নদীর ভৈরব অংশ থেকে এই মাছটি ধরা পড়ে। সেখান থেকে কিনে নিয়ে আসেন মিন্নত আলী।
এছাড়া ২৫ কেজি ওজনের আরো একটি বাঘাইড় মাছ নিয়ে এসেছেন পইল গ্রামের ডালি হাটির নূর মিয়া। তিনি মাছটির দাম হাকছেন ৩০ হাজার টাকা। ক্রেতারা এর দাম করেছেন ২০ হাজার। এটিও মেঘনা নদীর ভৈরব অংশে জেলেদের জালে আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছেন নূর মিয়া।
এদিকে ১৫ কেজি ওজনের আরো একটি বাঘাইড় নিয়ে মেলায় এসেছেন একই গ্রামের কদর আলী। তিনি এটির দাম হাঁকছেন ২৫ হাজার টাকা। তবে এ পর্যন্ত কোনো ক্রেতা এটির দাম করেননি।
সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, রুই, কাতল, বোয়াল, মৃগেল, শিং, মাগুর, কই, পাবদা, চিংড়ি, চিতলসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। হবিগঞ্জ ও আশপাশের এলাকা থেকে ক্রেতারা এসেছেন এখানে মাছ কিনতে।
বানিয়াচং থেকে মেলায় আসা শিক্ষক মঈনুল হোসেন জানান, দুপুর থেকে তিনি মেলায় ঘুরছেন। তবে সন্ধ্যার মধ্যে পছন্দমত একটি মাছ কিনে নিয়ে যাবেন তিনি।
স্থানীয় শীবেন্দ্র চন্দ্র দেব শিবু নামে একজন বাংলানিউজকে জানান, পইলের এই মাছের মেলাকে ঘিরে তাদের এলাকায় শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের মাঝেই আনন্দ বিরাজ করছে। প্রতিবারের মতো এবারো উৎসবমুখর পরিবেশে মেলাটি চলছে। তিনি তার পরিবারকে নিয়ে এসেছেন। ঘুরে দেখে যাওয়ার সময় একটি মাছ নিয়ে যাবেন।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্র্মকর্তা (ওসি তদন্ত) জিয়াউর রহমান বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাগ্মী নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মেলা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
আরএ