২০১৭ সালের জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিটিআরসির এক হিসাবে দেখা গেছে, এ সময়ে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৫ লাখ। এক বছরে তা বেড়েছে ৯ কোটি ১৩ লাখ।
২০১৮ সালের শেষে থ্রিজি গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৩৫ লাখ, যা আগের বছরে ছিল ৪ কোটি ৯৩ লাখ। ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফোরজি চালুর পর এর গ্রাহক সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখে।
বিটিআরসির তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ছিল ৫৭৫ জিবিপিএস, ২০১৮ সালে তা হয়েছে ৯১৩ জিবিপিএস। এ সময়ে ব্যান্ডউইথের ক্যাপাসিটি ৭৮৫ জিবিপিএস থেকে বেড়েছে ৯৬০ জিবিপিএস।
ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে সরকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অপটিক্যাল ফাইবারের বিস্তৃতি বাড়িয়েছে। ২০১৭ সালে অপটিক্যাল ফাইবারের বিস্তৃতি ছিল ৭৯ হাজার কিলোমিটার, ২০১৮-তে হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কিলোমিটার।
বুধবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর রমনায় বিটিআরসি ভবনে টেলিকম রিপোটার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক এসব তথ্য তুলে ধরেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, ২০১৭ সালে মোবাইল গ্রাহক ছিল ১৪ কোটি ৫১ লাখ, এক বছর পর তা বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৬৯ লাখ। একবছরে টেলি ডেনসিটি ৯০ দশমিক ০৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তবে বছর শেষে মোবাইলের সংখ্যা কমেছে বিটিআরসির হিসাবে ২০১৭ সালে ৩ কোটি ৪৬ লাখ হ্যান্ডসেট থাকলেও ২০১৮ সালের শেষে তা হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ। একবছরে কমেছে ১১ লাখ।
এ প্রসঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, মোবাইল হ্যান্ডসেটের জায়গায় আমরা আগাতে পারিনি। কারণ, যে একবার হ্যান্ডসেট কিনে পরের বছর আর তার কেনা লাগে না। সম্ভবত সে কারণেই সংখ্যা কমছে, হয়তো প্রতিবছরই কমতে থাকবে।
এক বছরে বিটিআরসির অর্জন নিয়ে তিনি জানান, গত বছরে ফোরজি তরঙ্গ নিলাম ও লাইসেন্স, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, ৫জি পরীক্ষা, অপারেটর পরিবর্তনের (এমএনপি) সেবা চালু করা হয়েছে। গতবছরে ৭৭০টি বিভিন্ন লাইসেন্স প্রদান করেছে, যার মধ্যে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) লাইসেন্স ৬২৩টি। সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি এমএনপির সিম কেনা বাবদ ১০০ টাকা মওকুফ হয়ে গেছে। তরঙ্গ নিলাম, লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স ফিসহ বিভিন্নখাতে এক বছরে বিটিআরসির রাজস্বের পরিমাণ বেড়েছে ২ হাজার ৩৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে হয়েছে ৬ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আয় না হলে কারো গল্পই হবে না, ইনকাম যার নাই, গল্প তার নাই। সে দেশ আগাতে পারবে না।
গতবছর টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স প্রদান, কোয়ালিটি অব সার্ভিস রেগুলেশন, এসএমপি প্রবিধানমালা প্রণয়ন করেছে বিটিআরসি।
বিভিন্নখাতে ২০১৭ সালে ২ হাজার ২৪৬টি অভিযোগ এসেছিল, যার মধ্যে ১ হাজার ৬৬০টি সমাধান হয়েছে। ২০১৮ সালে অভিযোগ এসেছিল ২ হাজার ৯৪৭টি, এরমধ্যে ২ হাজার ৮৪৮টি সমাধান করা হয়েছে। বিটিআরসি গত ২০১৭ সালে অবৈধ ভিওআইপির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২৩ লাখ ২৫ হাজার সিম শনাক্ত ও বন্ধ করেছে। আর গতবছরে ৩ লাখ ৬৪ হাজার সিম শনাক্ত ও বন্ধ করেছে এতে অবৈধ ভিওআইপি কমেছে। এবছরে বিটিআরসির নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি আগামী বছরের শেষে নতুন ভবনে যেতে পারব। এছাড়া ৮৬টি পদ দুই বছর ধরে ঝুলে ছিল, এটারও নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
২০১৯ সালের লক্ষ্য নিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, সেবার মান (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) উন্নয়ন করাই এবারের কাজ। পাশাপাশি যুগের চাহিদা মেটাতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংকস) নিয়ে কাজ করছি।
টিআরএনবি সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে’র সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিটিআরসির কমিশনার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
এমআইএইচ/আরআইএস/