বাজানদার রোববার (২০ জানুয়ারি) ঢামেকে ফিরে আসার পর রাতে তাকে হাসপাতালে রাখা হয়। এরপর সোমবার (২১ জানুয়ারি) ভর্তি করা হয় হাসপাতালের পাঁচ তলায় বার্ন ইউনিটে।
ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল বাজানদার আমাদের কাছে আসে। সে রাতে হাসপাতালেই ছিল। আজকে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসার পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত হবে।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, বৃক্ষমানব আবুলকে আমরা আগেও চিকিৎসা দিয়েছি। এখন সে আমাদের কাছে ফিরে এসেছে, আমরা আবারও চিকিৎসা দিচ্ছি। তাকে ভর্তি করা হয়েছে, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্রুত করা হবে, তারপর পুনরায় চিকিৎসা দেওয়া হবে।
খুলনার আবুল বাজানদার ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার জন্য গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। গত দু’বছরে তার হাত-পায়ে ২৫ দফা অস্ত্রোপচার চালানো হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ এনে এক পর্যায়ে হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান।
তবে রোববার সকালে মা আমেনা বেগমকে সঙ্গে করে ফের ঢামেকে আসেন আবুল। তার হাতে নতুন করে গজিয়েছে শেকড়। বাজানদার বলেন, চিকিৎসকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমার হাতে ও পায়ে ২৫টি অপারেশন করেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু এক পর্যায়ে আমি হতাশ হয়ে যাই। এতোগুলো অপারেশনের পরেও আমি যখন সুস্থ হচ্ছি না, আমার হাতে ও পায়ে আবারও শেকড় গজাচ্ছে। তখন আমি নিরাশ হয়ে একপর্যায়ে রাগের মাথায় খুলনায় বাড়িতে চলে যাই। আমার যাওয়াটা ঠিক হয়নি। আমি আবারও বাঁচতে চাই, সাধারণ মানুষের মতো সুস্থ হয়ে কাজ করে খেতে চাই। আবারও ফিরে এসেছি চিকিৎসার জন্য।
সোমবার বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়ে বাজানদার বাংলানিউজকে বলেন, ডা. স্যার আমাকে আবারও চিকিৎসা করাবেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
এজেডএস/এইচএ/
** হাতে শেকড় নিয়ে ফের হাসপাতালে বৃক্ষমানব