কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক স্টেনোগ্রাফার রুবিনা খানম, আবজাল হোসেনের দুইভাই ফরিদপুর টিবি হাসপাতালের ল্যাব সহযোগী বেলায়েত হোসেন ও লিয়াকত হোসেন, আবজালের তিন শ্যালক স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাখালী কার্যালয়ের গাড়িচালক রফিকুল ইসলাম, একই অফিসের উচ্চমান সহকারী বুলবুল ইসলাম ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন; যার প্রমাণ প্রাথমিক অনুসন্ধানে পেয়েছে দুদক।
পরে অবৈধভাবে অর্জিত আবজাল ও তার স্ত্রীর বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশনা চেয়ে আদালতের দারস্থ হয় দুদক।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ইমরুল কায়েস এ নির্দেশনা দেন।
দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বাংলানিউজকে বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ায় দুদকের পক্ষ থেকে কোর্টে আবজাল ও তার স্ত্রীর সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার নির্দেশের আবেদন করা হয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট তার সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ হাজার টাকার বেতন পেলেও ঢাকার উত্তরায় আবজাল ও তার স্ত্রীর নামে বাড়ি আছে পাঁচটি। আরেকটি বাড়ি আছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। আর রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে অন্তত ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট। দেশে-বিদেশে আছে বাড়ি-মার্কেটসহ অনেক সম্পদ। এসব সম্পদের বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, আবজাল হোসেন গত একবছরে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ২৮ বারেরও বেশি সপরিবার সফর করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির পর্টার স্ট্রিট মিন্টুতে যে বাড়ি কিনেছেন, তার দাম দুই লাখ ডলারেরও বেশি। এ অভিযোগে গত ১০ জানুয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
আবজালের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি অভিযোগের তদন্ত করছেন উপ-পরিচালক শামসুল আলম।
এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি আবজাল দম্পতির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।
এদিকে দুদক সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৭ জানুয়ারি আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানমকে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির থাকতে বলা হয়। তবে হাজির না হয়ে তিনি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন দুদকে।
১৯৯৮ সালে রুবিনা খানম স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। তবে ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে গড়ে তোলেন রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, মূলত স্বাস্থ্য অধিদফতরে একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য মূলত স্বামী-স্ত্রী মিলে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন তারা।
এদিকে আবজালের ভাই ও শ্যালকদের মঙ্গলবার দুদকে হাজির হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু হাজির না হয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন তারা।
>> ‘টাকার কুমির’ আবজালের সব সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
আরএম/আরএ