ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেব্রুয়ারি এলেই সর্বত্র বাংলা ব্যবহারের অভিযান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
ফেব্রুয়ারি এলেই সর্বত্র বাংলা ব্যবহারের অভিযান ভেকু দিয়ে ইংরেজিতে লেখা সাইন বোর্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেক ভাষা সৈনিক বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন। ভাষা সৈনিকদের সম্মান জানাতে ১৯৯৯ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। 

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ সরকারও সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের রায় এবং বেশকিছু সরকারি আদেশ ও পরিপত্র দিয়ে বাংলা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পাঁচ যুগের অধিক সময় পার হয়ে গেলেও এখনো সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহারের জন্য অভিযান করতে হয়, জেল জরিমানা করতে হয়।

সরকারি বিভিন্ন দফতরও যেন এই ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে সরব হয়ে ওঠে। অথচ বছরের বাকি ১১ মাস সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহারে থাকে না বিশেষ কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাস এলেই এমন উদ্যোগ কি বাস্তবতার নিরিখে নাকি লোক দেখানো!

গত বছরও ফেব্রুয়ারির আগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সর্বত্র বাংলা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে বিশেষ অভিযান কর্মসূচি হাতে নেয়। এরপর কিছুদিন অভিযান করে কয়েকটি দোকান ও শপিং মলে জরিমানাও করে। তবে একুশে ফেব্রুয়ারির পরে যথারীতি পাল্টে যায় এসব চিত্র।

সিটি কর্পোরেশনের এমন উদ্যোগের বিষয়ে মহাখালীর বাসিন্দা মাসুম আলী বাংলানিউজকে বলেন, এই কয়েকদিন অভিযান করবে তারপর যা তাই। এসব আসলে লোক দেখানো। সিটি কর্পোরেশন যদি আন্তরিক হয় তাহলে প্রতিবছরই অভিযান করবে কেন? তাদের চোখের সামনেই তো সাইন বোর্ড বসানো হচ্ছে তাতে কি বাঁধা দিতে পারছে?

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের হান্নান স্টোরের মালিক আব্দুল হান্নান বাংলানিউজ বলেন, গত বছরও একবার এরকম অভিযান করেছিল। আসলে আসে কিছু জরিমানা করে আবার চলে যায়। আমার দোকানে বাংলা সাইনবোর্ড থাকলেও বড় বড় কোম্পানির সাইনবোর্ড ঠিকই ইংরেজি ভাষায় লেখা। তাতে কি কিছু করতে পারছে? আসলে ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই তাদের মনে পড়ে অভিযান করতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা সবময় চেষ্টা করি, করি বলেই ডিএনসিসি এলাকার অনেক দোকানেই ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষার সাইনবোর্ড দেখা যায়। এটা চলমান কাজ।

যারা সাইনবোর্ড ব্যানারে বাংলা ভাষা ব্যবহার করছেন না তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার আইনের ৯৩ ধারায় জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া হাইকোর্টের আদেশ ও সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা না মানায় ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হচ্ছে।

সর্বত্র বাংলার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানী এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে এ অভিযান চলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।