বুধবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা মারিয়া খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
যার পিটিশন নম্বর-৮/১৯।
অপরদিকে মেহেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোস্তাফিজুর রহমান এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তা (ডিআইও-১) ওয়ান ফারুক হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সদর থানার এসআই জিয়া দু’জন কনস্টেবল নিয়ে বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি শুরু করেন। বাড়িতে কেউ নেই বলাতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে টিনের দরজায় লাথি মেরে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ঘরের মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্র তছনছ করেন। তারা চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে এবং আলমারিতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করেন। পরে রান্না ঘরে মোটরসাইকেল দেখে তার চাবি দিতে বলেন। চাবি দিতে না চাইলে তখন ওই গৃহবধূকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেন।
একপর্যায়ে চাবি দিয়ে দিলে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের অ্যাপাচি আরটিআর ব্রান্ডের মোটরসাইকেলটি নিয়ে যান তারা। যাওয়ার সময় বলে যান টাকা নিয়ে গিয়ে মোটরসাইকেল ফেরত নিয়ে আসতে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৮৫ হাজার টাকা, ৯১ হাজার টাকা মূল্যে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যান এসআই জিয়া।
জানা যায়, সোহেল নামে এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের সঙ্গে পূর্বের কোনো বিরোধের জের ধরে অন্তঃসত্ত্বা মাবিয়া খাতুনের স্বামী বাকের হোসেনের বিরুদ্ধে থাকনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর এসআই জিয়া বাকেরকে গ্রেফতার করতে যান তার বাড়িতে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জিয়া মেহেরপুর সদর থানার এসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
মেহেদী হাসান বাকের বাংলানিউজকে বলেন, যদি কোনো অপরাধ করে থাকি আমি করেছি। আমার স্ত্রী কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাড়িঘর কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাবাও একজন পুলিশ কর্মচারী। পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরণের ব্যবহার তিনি করতে পারেন না। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে এসআই লস্কর লাজুল ইসলাম জিয়া বাংলানিউজকে বলেন, অনটেস্ট (লাইসেন্সবিহীন) মোটরসাইকেলটি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এর বেশি কোনা কথা বলতে চাননি তিনি।
এ ব্যাপারে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান শেখ জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
জিপি