সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাহালমের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়ায় গিয়ে দেখা যায়, শতশত মানুষ তাকে এক নজর দেখতে ভিড় করেছেন। অনেকেই শান্তনা দিচ্ছেন জাহালম ও তার মাকে।
স্বজনদের কাছে পেয়ে খুব ভালো লাগছে, শান্তি লাগছে জানিয়ে জাহালম বাংলানিউজকে জানান, মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার যন্ত্রণা ভুলতে পারছি না। একমাত্র শিশু কন্যার মুখে বাবা ডাক শোনা থেকে বঞ্চিত হয়েছি দীর্ঘ তিন বছর। কে ফিরিয়ে দেবে এই তিন বছর। দুনিয়ার এমন কোনো শক্তি আছে যে আমাকে আমার তিন বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে? যদি নাই পারবে তাহলে কেনো সঠিকভাবে তদন্ত না করে আমাকে আটক করা হলো। কেনোই বা কোনো দোষ না করেই দীর্ঘ তিন বছর কারাগারে থাকতে হলো? কারাগারে থাকার সময়ে মামলা পরিচালনা করতে আমার সব জমিজমা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এখন থাকার জন্য একটি ছাপড়া ঘর ছাড়া কিছুই নেই। এই তিন বছরে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার পরিবার আমাকে মুক্ত করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। আমার মা অন্যের বাড়ি কাজ করে আমার মুক্তির জন্য দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়েছেন। আমি এর সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ চাই।
জাহালমের মা মনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে জানান, আমার ছেলেকে যারা বিনা দোষে কারাগারে পাঠিয়েছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। ছেলের মুক্তির জন্য আমি সবকিছু হারিয়েছি। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই।
আর কোনো মায়ের সন্তান এভাবে যেন বিনা দোষে জেলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এর আগে রোববার রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাহালম গভীর রাতে তার গ্রামের বাড়ি আসেন। ওই সময় তার মা তাকে দুধ দিয়ে গোসল করান।
জাহালম টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে। তিনি তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। মা, স্ত্রী কল্পনা ও সাত বছর বয়সী মেয়ে চাঁদনীকে নিয়ে তার সংসার। জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশ জুট মিলে কাজ নিয়েছিলেন জাহালম।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
এসআই