এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’র নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
অপরাধী না হয়েও আসামি হয়ে ৩ বছর ধরে কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন জাহালম। হাইকোর্টের আদেশের পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান জাহালম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিনা অপরাধে জাহালমের তিন বছরের কারাদণ্ড হয়েছে, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এজন্য দুদক তাদের ভুল স্বীকার করেছে। তারা এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে তদন্ত করছে। তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী (হাসানুল হক ইনু) যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সে নিয়মানুযায়ী-ই প্রদর্শিত হবে। সরকারের সিদ্ধান্তে যা করা হয়েছে, আমরা এর ব্যত্যয় ঘটাবো না। সে নিয়মনীতি অনুসরণ করেই আমরা চলবো।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’ যাতে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে এ সংগঠন হয়েছে। বর্তমানে দেশে ৩০টি চ্যানেল সম্প্রচার হচ্ছে। আরো বেশ কয়েকটি লাইসেন্স নেওয়ার পাইপলাইনে রয়েছে। এছাড়া মোট ৪৪টি চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়া আছে।
তিনি বলেন, বিদেশে বিজ্ঞাপন বানিয়ে দেশে চালানো হচ্ছে। এতে আমাদের দেশের কলাকৌশলীরা সুযোগ পাচ্ছেন না। পৃথিবীর কোনো স্থানে বিদেশি বিজ্ঞাপন চালাতে হলে আইনানুযায়ী ট্যাক্স দিতে হয়। আমাদেরও আইন আছে, কিন্তু অনেক সময় এটা কেউ মানে না বা অনুসরণ করে না। আমরা তাদেরকে বারবার বলার পরও তারা এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল হন না।
হাছান মাহমুদ বলেন, একটা সময় ছিল আমাদের পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আমাদের দেশের নাট্যকারদের নাটক বেশ জনপ্রিয় ছিল। কারণ আমাদের নাট্যকারদের মান ভালো। সে দেশের মানুষ বসে থাকতো আমাদের দেশের নাটক দেখার জন্য।
এদিকে মুক্তি পাওয়ার পর জাহালম কারাফটকে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বিনাবিচারের আটক থাকার ক্ষতিপূরণ চান। বারবার নিজেকে নির্দোষ বলার পরও তাকে যারা কারাগারে ঢুকিয়েছে, তাদের শাস্তি চেয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে টাঙ্গাইলের এই পাটকল শ্রমিক তার চাকরিও ফেরত চেয়েছেন।
জাহালমকে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তারের পর ২০১৬ সালের ১৭ মে ঢাকা থেকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। দুদকের ভুলে কারাগারে থাকা জাহালমকে সোনালী ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে রোববারই মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চের রোববার দেওয়া আদেশে বলা হয়েছিল, কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে এক মিনিটও কারাগারে রাখার পক্ষে আমরা না। এই ভুল তদন্তে কোনো সিন্ডিকেট জড়িত কি-না, সিন্ডিকেট থাকলে কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা চিহ্নিত করে আদালতকে জানাতে হবে। না হলে আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। এরকম ভুলের দায় দুদক কোনোভাবেই এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে কাটাতে হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
জিসিজি/জেডএস