মেলা মানেই বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। মেলা মানেই বাঙালির আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠার দিন।
এ মেলার প্রধান আকর্ষণ বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ। এ কারণে মেলার বেশিরভাগ জায়গাই মাছ ব্যবসায়ীদের দখলে। কাছের ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা ছোট-বড় ব্যাপারী মেলায় ব্যাপক পরিমাণ মাছের আমদানি হয়।
তাদেরই একজন আব্দুস সামাদ। প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি মাছের ব্যবসা করছেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। তবে এ মেলায় তিনি এবারই প্রথম মাছ নিয়ে এসেছেন। প্রায় ৭-৮টির মতো মাঝারি ও বড় আকারের বাঘাইড় মাছ ট্রাকে করে মেলায় নিয়ে এসেছেন। এরমধ্যে বড় মাছটির ওজন প্রায় ৪০ কেজির মতো। বাকি মাছগুলো ১৪-১৫ কেজি ওজনের। সবগুলো মাছই যমুনার।
মাছ ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ বাংলানিউজকে জানান, মেলায় নানা শ্রেণি পেশার মানুষ আসেন। সব মানুষেরই এ ধরনের মাছ কেনার ইচ্ছে থাকে। কিন্তু দামি ও বড় মাছ হওয়ার কারণে ইচ্ছে থাকলেও এতোবড় মাছ সব মানুষের একার পক্ষে কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই মাছগুলো কেটে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রথমে ৪০ কেজি ওজনের মাছটি কেটে বিক্রি শুরু করেন। প্রতিকেজি মাছ ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। কেটে বিক্রির করায় মেলায় আসা অনেক মানুষই তার বাঘাইড় কিনছেন যোগ করেন এই ব্যবসায়ী।
এছাড়াও মেলায় যমুনা নদী ও চলনবিলের বড় বড় প্রজাতির পাওয়া যায়। পাশাপাশি পুকুরে চাষ করা বড় বড় আকারের মাছও মেলায় তোলা হয়েছে। তবে মেলায় আসা মানুষের কাছে ৫-৮ কেজি ওজনের মাছের চাহিদা বেশি।
মাছ ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বাবু বাংলানিউজকে জানান, ক্রেতা সাধারণের চাহিদা অনুযায়ী মেলায় মাছের আমদানি করা হয়। কারণ তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে এ মেলায় মাছ নিয়ে আসেন। এখানকার ক্রেতা সাধারণের চাহিদার কথা তার জানা। এই মেলায় আসা ক্রেতারা সাধারণত ৭-৮ কেজি ওজনের মাছ বেশি কিনে থাকেন।
মেলায় ছোট-বড় আকারের মিষ্টি, কাঠের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্লাস্টিকের খেলনা, নানা আইটেমের কসমেটিকস সামগ্রী, শিশুতোষ রকমারি জিনিসপত্র এ মেলায় পাওয়া যায়।
নিমন্ত্রণে আসা জামাই শাহ আলম বাংলানিউজকে জানান, মিষ্টি, নানা ধরনের খেলনা সামগ্রীসহ একটি ৮ কেজি ওজনের কাতল মাছ কিনেছেন। প্রতি কেজি মাছের দাম পড়েছে সাড়ে ৩০০ টাকা করে। এরপর শ্বশুরালয়ে ফিরেছেন।
কামাল পাশা জনি বাংলানিউজকে জানান, একদিনের মেলায় এতো মানুষ তা ভাবাই যায় না। আর মানুষের চাহিদা অনুযায়ী দোকানপাটেরও কোন খামতি নেই। মেলায় যে ধরনের দোকানপাট আসা দরকার তার সবটাই এই্ মেলাতে উপস্থিত। গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য দেখাও হলো। পাশাপাশি সবাই মিলেমিশে আনন্দ উল্লাস করাও হলো যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৯
এমবিএইচ/এনটি