বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানান শিক্ষকেরা।
নতুন সরকারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাকির হোসেনকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবি দাওয়া উল্লেখ করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রাথমিক শিক্ষার স্তরকে নন-ভোকেশনাল বিভাগ ঘোষণা করে প্রধান শিক্ষক পদকে একাদশ থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করা এবং চলতি দায়িত্ব হিসেবে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত থাকা প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষককে প্রধানশিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া। এছাড়াও শ্রেণীকক্ষের কার্যক্রম সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা অথবা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত করারও দাবি জানান শিক্ষকেরা।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালিদ হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার জন্য, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এবং সর্বোপরি শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সরকার গঠিত হয়েছে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা সবার সরকার সব সময় শিক্ষকদের অপমান করেছেন। মূল্যায়ন করেছেন শুধু শেখ হাসিনার সরকার। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখুন। আপনাদের দাবিগুলো দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা পাওয়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর এ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও সবার আগে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষকদের মূল্যায়ন করেছেন। তিনি সে সময় প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সেগুলোর শিক্ষকদের জাতীয়করণ করেন। এরপর প্রায় ৪০ বছর শিক্ষকদের জন্য কোনো সরকার কাজ করেনি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাবার মতো তিনিও শিক্ষকদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি প্রায় ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন। আপনাদের যেসব দাবি দাওয়া আছে সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ নিয়ে কথা হচ্ছে। অতি দ্রুতই আপনাদের দাবি-দাওয়া গুলো পূরণ করা হবে।
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পাঠদানের আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা সত্য যে অনেক শিক্ষকই এমনকি অনেক প্রধানশিক্ষকও বিদ্যালয় উপস্থিত থাকেন না। প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এমনটা মোটেও কাম্য নয়। সম্প্রতি এমন অভিযোগে সাত শিক্ষককে বরখাস্ত করতে হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। আর প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও সংগঠনের উপদেষ্টা সুজিত রায় নন্দী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ এফ এম মনসুর কাদের, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদসহ অন্যান্যরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
এসএইচএস/এসএইচ