সম্প্রতিও এক বৃদ্ধের মরদেহ সোনাইছড়ির এ খালটি ভেলায় পার হয়। তবে মরদেহ নিয়ে মনিরঝিল-সোনাইছড়ি গ্রামের দুর্ভোগের ব্যাপারটি এবার নীরবে চলে যায়নি।
এই শুষ্ক মৌসুমেও ভেলায় করে কবরস্থানে নিয়ে যেতে হলো মরদেহ। এটা বড় সমস্যা। তা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। তাদের প্রশ্ন- চির অবহেলিত মনিরঝি-সোনাইছড়িবাসীর দুঃখ ঘুচবে কবে?
জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মারা যান ওই এলাকার মনির আহম্মদ (৮৫)। তখন তার মরদেহ নিয়ে বিপাকে পড়ে বসেন গ্রামবাসী। মরদেহটি মনিরঝিল বড় কবরস্থানে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। একটি ভেলা বানিয়ে, সেটাতে করে তারা কফিন নিয়ে যায় কবরস্থানে।
সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের মনিরঝিল সোনাইছড়ি গ্রামের মনির আহম্মদ মারা যান। কিন্তু তাদের কবরস্থানটি দুই কিলোমিটার দূরে মনিরঝিল গ্রামে। এছাড়া সম্প্রতি চাষাবাদের জন্য সোনাইছড়ি খালে রাবার ড্যামের মাধ্যমে পানি আটকানোর কারণে তাদের পড়তে হয় সমস্যায়। খালটির পানি ভরে উঠেছে। যে কারণে ভেলায় করে মরদেহ পার করতে হলো।
স্থানীয়রা বলছে, মাঝখানে বাঁকখালী নদীর কারণে মনিরঝিল গ্রামটি উপজেলা এবং ইউনিয়ন সদর থেকে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া বিচ্ছিন্ন এ গ্রামটির অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব অনুন্নত। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে তারা। এই খালে একটি ব্রিজ বানিয়ে দেওয়া তাদের পুরনো দাবি। যদিও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছিল, কিন্তু এখন বন্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও ভেলায় করে মরদেহ পার করাতে হচ্ছে এখানে। বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। কবে আমাদের এই দুঃখ ঘুচবে- কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তার।
তবে স্থানীয় কাউয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, ওই স্থানটি মূলত একটু নিচু। ওই স্থানে শুধু একটি বাড়ি আছে। তাই ওখানে ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
এসবি/টিএ