ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুবি ক্যাম্পাসে ছুঁয়েছে বসন্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
খুবি ক্যাম্পাসে ছুঁয়েছে বসন্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের বসন্তবরণ

খুলনা: আকাশে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা/কারা যে ডাকিল পিছে! বসন্ত এসে গেছে/মধুর অমৃত বাণী, বেলা গেলো সহজেই/মরমে উঠিল বাজি; বসন্ত এসে গেছে/থাক তব ভুবনের ধুলিমাখা চরণে/মথা নত করে রব,বসন্ত এসে গেছে/বসন্ত এসে গেছে। অনুপম রায়ের লেখা এ গানের মতো প্রকৃতিতেও বসন্ত এসে গেছে।

বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে, ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে। কুমার বিশ্বজিতের এই গানের সুর কানে কানে বাজছে অনেকের।

মনের খুশিতে কেউ হয়তো বলছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতার চরণ, ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ বসন্ত। আবার কেউ কেউ গাইছেন রবীন্দ্রনাথের ‘আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়...। ’

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুনে সারাদেশের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতেছে তরুণ প্রাণ। বসন্তবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠেন উৎসবের আমেজে। ক্যাম্পাসের ফুলের বাগানে ফুটে থাকা রংবেরঙের ফুলের সঙ্গে তোলেন সেলফি।

শীতের আষ্টেপৃষ্ঠে বন্ধন সরিয়ে প্রকৃতির ফুলে ফুলে সেজে ওঠার আগমনী বার্তা ঐশ্বর্যময় বসন্তের। বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। বসন্ত মানেই মৃদু হাওয়ায় প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটা। মিলনের ঋতু বসন্তই মনকে সাজায় বাসন্তী রঙে, জীর্ণতা সরিয়ে নতুন শুরুর প্রেরণা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বসন্তবরণ করা হয়।

এ উপলক্ষে সকাল ৮টায় কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন ও বাংলা ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলার বসন্তবরণসংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রটি কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে অদম্য বাংলার সামনে দিয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে দিয়ে অদম্য বাংলায় গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে বসন্তবরণে প্রভাতী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা রায়ের সঞ্চালনায় বাংলা কবিতা ও গান, নৃত্য পরিবেশন করা হয়। অন্য কর্মসূচির বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক কীর্তন খোলা মঞ্চস্থ করা হবে।

অপরদিকে বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে ডিসিপ্লিন প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বসন্তবরণে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি চারুকলা স্কুলের সামনে থেকে শুরু করে অদম্য বাংলার সামনে এসে শেষ হয়।  

পরনে লাল, হলুদ ও বাসন্তী রঙের শাড়ি। মাথায় গোলাপ, বেলি, গাঁদা জিপসি ফুলের টায়রা, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় লাল টকটকে চন্দ্রমল্লিকা, বেণীতে গোঁজানো রজনীগন্ধা। বাহারি ফুলে সেজেগুজে এসেছিল তরুণীরা। পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরা তরুণ শিক্ষার্থীরা যোগ দিয়েছেন বসন্তবরণের বিভিন্ন আয়োজনে।

খুবির বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী কানিজ নাইমা রাখি বাংলানিউজকে বলেন, বসন্ত মানে রঙের উৎসব। বসন্ত মানে আবিরে রাঙানো রঙিন পথ। বাঙালি জীবনে বসন্তের আলাদা উপস্থিতি নতুন নয়। সেই প্রাচীনকাল থেকেই সক্রিয় গৌরব আর রঙে উজ্জ্বল বসন্ত।  নানা রঙে, নানা সাজে, নেচে-গেয়ে নানা আয়োজনে আজ সবাই বরণ করে নিচ্ছে সেই ঋতুরাজ বসন্তকে। যেখানে পিছিয়ে নেই আমরাও।

খুবির সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সায়মা সুলতানা মিম বাংলানিউজকে বলেন, বসন্তই মনকে সাজায় বাসন্তী রঙে, মানুষকে করে আনমনা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।