ঢাকা, বুধবার, ২ আশ্বিন ১৪৩২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

মাছমেলায় ৭ কেজি ওজনের ‘মাছ মিষ্টি’

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৫১, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
মাছমেলায় ৭ কেজি ওজনের ‘মাছ মিষ্টি’ মাছমেলায় ৭ কেজি ওজনের মাছ মিষ্টি/ছবি: আরিফ জাহান 

বগুড়া: মাছের জন্য বিখ্যাত পোড়াদহ মেলায় মিষ্টির দোকান বসিয়েছেন সোনাতলা সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ এলাকা থেকে আসা আব্দুর রাজ্জাক। ক্যাশ বাক্সের ওপর হাত রেখে হেলান দিয়ে বসেছিলেন তিনি। তার চারপাশ ঘিরে শোভা পাচ্ছিলো অসংখ্য মিষ্টির গামলা।

একেক গামলায় একেক ধরনের মিষ্টি রাখা। এসব মিষ্টির আবার একেক নাম।

নামের সঙ্গে স্বাদ ও দাম ভিন্ন। এরমধ্যে প্রায় পাঁচটির মতো গামলায় দেখা গেলো মাছ আকৃতির মিষ্টি। একেকটি মিষ্টির ওজন হবে সাড়ে তিন থেকে সাত কেজি পর্যন্ত। প্রতিকেজি মিষ্টির দাম ৩০০-৩৫০ টাকা।
 
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় মিষ্টিপট্টিতে গেলে নজর কাড়ে মাছ আকৃতির বড় বড় এসব মিষ্টি।
 
মিষ্টির মাথার অংশটা মাছের মাথার মতো করেই বানানো। পেছনের অংশটা দেখতে মাছের লেজের মতো। মিষ্টি ওপর সুন্দর করে আঁকানো মাছের চোখ, মুখ, কান্তা প্রভৃতি। মিষ্টি হলে কি হবে, দেখতে যেন আস্ত মাছের মতোই। মিষ্টিগুলো অত্যন্ত দক্ষ কারিগরের তৈরি। এ কারণে সবার কাছে মিষ্টিগুলো ‘মাছ মিষ্টি’ নামে পরিচিত।
 
মেলায় নিমন্ত্রণে আসা জামাই ও স্বজনদের মিষ্টিপট্টিতে ঘোরাঘুরি মূলত মাছ মিষ্টি ঘিরেই। তাই বলে সাধারণ মিষ্টি কেনা বাদ রাখেন না তারা। সবাই যে যার মতো করে সাধ্য অনুযায়ী সব ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রী কেনার চেষ্টা করেন। তবে অন্তত একটি করে হলেও বড় ধরনের মাছ মিষ্টি কেনেন নিমন্ত্রণে আসা জামাইরা।
 
মাছমেলায় মিষ্টির পসরাজামাই কামাল পাশা বাংলানিউজকে জানান, তিনি এই এলাকায় নতুন বিয়ে করেছেন। নতুন জামাই হিসেবে মেলা উপলক্ষে তাকে নিমন্ত্রণ করে আনা হয়েছে। শ্বশুরালয়ের পক্ষ থেকে তাকে সাধ্যানুযায়ী সেলামিও দেওয়া হয়েছে।
 
তিনি আরও জানান, মেলায় গিয়ে তিনি প্রথম একটি ১০ কেজি ওজনের বিগহেড মাছ কিনেছেন। এরপর মিষ্টি পট্টিতে গিয়ে দেখেন ‘মাছ মিষ্টি’। এমন মিষ্টি দেখেই ভীষণ পছন্দ তার। তাই সাত কেজি ওজনের ‘মাছ মিষ্টি কিনে তবেই শ্বশুরালয়ে ফেরেন তিনি।
 
আবার মাছের সঙ্গে মিল রাখতে গিয়ে ‘মাছ মিষ্টি’ কিনেছেন মেলা উপলক্ষে নিমন্ত্রণে আসা আরেক জামাই সজিবুল ইসলাম।
 
মিষ্টির দোকানি গোপাল ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, বংশ পরম্পরায় তিনি এ ব্যবসা করে আসছেন। নিজে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হওয়ার পর থেকেই এ মেলায় আসেন তিনি। একই কথা জানালেন ফেলু চন্দ্র মোহন্ত, আকবর আলী।
 
তারা জানান, পোড়াদহ মূলত মাছের মেলা। তাই মাছকে প্রাধান্য দিয়ে মাছ আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। ‘মাছ মিষ্টি’ ছাড়াও ছোট-মাঝারি ও বড় আকারের ‘লাভ মিষ্টি, কদম মিষ্টি, চমচম, হাসিখুশি, কালোজাম, স্পঞ্জ মিষ্টি, ছানার জিলাপি, জিলাপি, লাড্ডু, মুড়ি-মুড়কি, কদমাসহ নানা ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রী তৈরি করেন তারা। এসব মিষ্টি পাওয়া যায় এই মেলায়।
 
এসব দোকানিরা বাংলানিউজকে জানান, বড় আকারের মিষ্টিগুলো ১৮০-২০০ টাকা কেজি, মাঝারি আকারের মিষ্টি ১৫০-১৬০ টাকা কেজি, ছোট আকারের মিষ্টি ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এমবিএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ