যে কারণে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফুলের চাহিদা থাকে ব্যাপক। আর চাহিদার কথা মনে রেখেই একদিনের ফুল বিক্রেতা হয়ে উঠেছেন অনেকেই।
ব্যতিক্রম নয় ‘ওরাও’। ওদের ছোট্ট দোকান নানা রঙ ও বর্ণের ফুলে ঠাসা। রকমারি ফুলের সুবাস ভরিয়ে দিচ্ছে মন। তবে চায়না জাতের গোলাপ দৃষ্টি কাড়ে সবার।
বিক্রিও হচ্ছে বেশি বেশি। আবার দামও অন্য দোকান থেকে দ্বিগুণ। চড়া দামের মধ্যেও সবাই হুমড়ি খাচ্ছে তিন তরুণ আকাশ, দুর্জয় ও সিয়ামের দোকানে।
ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড়ে জব্বার আলী কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে রকমারি ফুলের পসরা সাজিয়ে বসা এই তিন শিক্ষিত তরুণের দেখা মিলে। শুধু লাভ করাই যে ভালোবাসা দিবসে তাদের মূল উদ্দেশ্য বিষয়টি তেমন নয় মোটেও।
সমবয়সীদের মতো প্রিয় মানুষকে মনের কথা জানানোর জন্য ছোটাছুটিতে ব্যস্ত না রেখে সবার সঙ্গে ভালোবাসার পবিত্র সম্পর্কের বন্ধনকে জোরালো করতেই সৌন্দর্যের এই প্রতীকের সমারোহ ঘটিয়েছেন। আবার নিজেদের নির্মল হৃদয়ও যেন ভাসিয়ে দিচ্ছেন ভালোবাসার প্লাবনে।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে আলাপ হচ্ছিলো এই তিন তরুণের সঙ্গে। একদিনের ফুল ব্যবসায়ী হলেও ওরা তিনজনই শিক্ষার্থী। পড়াশোনাতেই মন রয়েছে ওদের।
তবে মনের ভেতরে বহমান তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে আকাশ, দুর্জয় ও সিয়াম ক্রেতাদের মন রাঙাতে নানা জাতের ফুলের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। রাজধানীর শাহবাগ থেকে তারা এসব ফুল কিনে এনেছেন।
আকাশ শহরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং দুর্জয় ও সিয়াম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের শিক্ষার্থী। ভালোবাসার সঙ্গে ফুলের সম্পর্ক গভীর। এজন্যই আমরা একদিনের ফুল ব্যবসাকে বেছে নিয়েছি, জানান তারা।
সিয়াম বাংলানিউজকে বলেন, সব দোকানেই দেশি গোলাপের সমারোহ থাকলেও কেবল তাদের সংগ্রহে রয়েছে চায়না জাতের গোলাপ। হলুদ, লাল ও সাদা রঙের এই গোলাপেই সবার আকর্ষণ বেশি।
দেশি জাতের গোলাপ প্রতি পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে তাদের এই গোলাপ প্রতি পিস ৭০ টাকা দামে সবাই কিনছেন।
এই গোলাপের বিশেষত্ব তুলে ধরে আকাশ বলেন, ‘চায়না জাতের লাল গোলাপ দেখতে অবিকল প্লাস্টিক গোলাপের মতো। দেশি গোলাপের পাতা ঝরে পড়লেও এর স্থায়ীত্ব অনেক বেশি। কমপক্ষে এক সপ্তাহ পর্যন্ত সতেজ থাকে। প্রেমের স্মৃতি হিসেবেও এই গোলাপ অনন্য। ’
এই তরুণের দোকানে ফুল কিনতে আসা সুমাইয়া আক্তার নামে এক তরুণী বাংলানিউজকে জানান, সারপ্রাইজের জন্য চায়না গোলাপের বিকল্প নেই। তবে দাম অন্য গোলাপ থেকে দ্বিগুণ। তবুও বাধ্য হয়েই সবাইকে কিনতে হচ্ছে।
তিন তরুণের ভ্রাম্যমাণ এই দোকানটিতে সূর্যমুখী, ডালিয়া, গন্ধরাজসহ অন্যান্য ফুলও রয়েছে। মাথায় ফুলের টায়রা বা ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে দিনব্যাপী বিক্রি-বাট্টার প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমএএএম/জেডএস