ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সিসিকে মাধ্যমিকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার উদ্বেগজনক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
‘সিসিকে মাধ্যমিকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার উদ্বেগজনক’

সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিশুদের ঝরে পড়া উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

শহরে দারিদ্রতার মূলে বাসা ভাড়া বৃদ্ধি অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়নকে সুষম পর্যায়ে নিতে হলে দারিদ্রতার এসব কারণ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।


 
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সিসিক মিলনায়তনে দিনব্যাপী ‘দারিদ্রবান্ধব শহর উন্নয়ন কর্মশালায়’ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে।  

প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সুষম উন্নয়নে নেওয়ার কৌশল হিসাবে ১১টা শহরে কাজ করবে জানিয়ে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এ পাইলট প্রকল্প সিলেট সিটি থেকে শুরু হচ্ছে। সিসিকের আর্থিক সক্ষমতা কিভাবে বৃদ্ধি হবে, সেজন্য জনগণের মতামত প্রয়োজন।
 
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টার মতে, গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। অথচ শহর পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় অনেক গ্যাপ রয়েছে। সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ড কমিউনিটি ক্লিনিক নেই। তাই দরিদ্র শ্রেণীর মানুষকে যেতে হচ্ছে হাসপাতালের প্রাইভেট সেক্টরে। যেটা তাদের জন্য বোঝা স্বরূপ। এক্ষেত্রে সবার মতামত নিয়ে করণীয় নির্ধারণ প্রয়োজন।
 
তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনার অন্যতম দুর্বলতা হচ্ছে, যাদের জন্য পরিকল্পনা তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলি না। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যার বিষয়গুলো নজরে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
 
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সিসিকের রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বাজেট ধরে করলে সেটা অন্যরকম হতো। যাদের জায়গা নেওয়া হচ্ছে, তারা বিশাল একটা বাজেট পেতো। তবে সামাজিকভাবে মানুষ স্বেচ্ছায় জায়গা দিয়ে উন্নয়নে অবদান রাখছে। এখানে অর্থটা যোগান হচ্ছে ভিন্নভাবে।  

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, প্রথম সেশনে বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি জোরালোভাবে এসেছে। সিটি করপোরেশনের স্লাম এরিয়া বা বস্তি এলাকায় স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করা মাত্রই মালিকরা বাসা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। সাধারণ মানুষ এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাসা ভাড়া বাড়াতে মালিকরা পুরাতন ভাড়াটিয়াদের সরিয়ে নতুন ভাড়াটিয়া তোলেন। বাসা ভাড়া নির্ধারণে সিসিক কাউন্সিলরদের নজর দিতে আহ্বান জানান তিনি।
 
তিনি বলেন, জীবন যাপনের ব্যয় নির্বাহ করার কারণে শহরের ভাড়াটে বাসিন্দারা শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খরচ মেটাতে সক্ষম হচ্ছে না। তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুনঃভর্তি করাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে শিশুর পড়ালেখা বন্ধ করাতে বাধ্য হচ্ছেন। সাধারণ জীবন যাপনে সামাজিকভাবে ব্যয় মেটাতে গিয়ে পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি থেকে ডিভোর্সের হারও বাড়ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শহরে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হবে। এছাড়া শহরের উন্নয়ন বৃদ্ধিতে চলমান হোল্ডিং ট্যাক্স রি-এসেসমেন্টের উপর গণশুনানি করা হবে বলেও যোগ করেন তিনি।
 
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সিলেটে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরের উপকন্ঠে হওয়াতে এবং বছর/দুই বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণে বেকার যুবকরা খরচ চালাতে না পেরে বিমুখ হয়। যে কারণে শহরের অভ্যন্তরে সিসিকের অধীনে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার দাবি জানান।  

এছাড়া বিপন্ন ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীরা কষ্ট করে হাতের কাজ করলেও মূল্য পায় না। যে কারণে নারীরা কর্মমুখী শিক্ষা থেকে বিমুখ হচ্ছেন। এর প্রতিকার হিসাবে সিসিকের উদ্যোগে একটি সেলস সেন্টার খোলার দাবি জানিয়েছেন তারা। যেখানে ন্যায্যমূল্যে তৈরিকৃত জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারবেন।
 
কর্মশালায় সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শহর উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।