বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে যৌথ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়।
পড়ুন>> সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু
ব্রিফিংয়ের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন বলেন, আগুনের সূত্রপাত হয়েছে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে।
তবে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান বলেন, আগুন সাধারণত নিচের দিক থেকে উপরের দিকে যায়। এই বিষয় নিয়ে আমরা তদন্ত করছি, এক্সপার্টরা কাজ করছেন। তদন্ত শেষ হলে আগুনের সূত্রপাতের সঠিক স্থান সম্পর্কে জানা যাবে।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানিয়েছিলেন, নিচতলায় ওষুধের স্টোররুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় শিশু ওয়ার্ডের ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকলেও কেউ হতাহত হয়নি দাবি করে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব বলেন, আইসিইউ-য়ে ১০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এই ঘটনায় হাসপাতালে কোনো রকম হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এখন ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালু আছে।
‘রাতে সীমিত আকারে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে। রোগীদের প্রাথমিকভাবে সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আশেপাশের অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ’
এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থান করলেও প্রধানমন্ত্রী তার মুখ্য সচিবের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সব ধরনের খবরাখবর রাখছেন বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, বিষয়টা তদন্তের আওতায় রয়েছে। আমাদের এক্সপার্টরা তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। আলী আহাম্মেদ বলেন, হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো ছিল। অনেকগুলো এক্সিট গেট ছিল, ফলে রোগীরা খুব দ্রুতই বের হয়ে যেতে পেরেছেন।
‘তারপরেও হাসপাতালের যদি কোনো ত্রুটি তদন্তে পাওয়া যায় তাহলে সে বিষয়টি চিহ্নিত করা হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে। ’
তবে আতঙ্কিত রোগী ও তাদের স্বজনেরা কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তবে অগ্নি-নির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে থাকা প্রায় ১২শ’র মতো রোগীর সবাইকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। এর মধ্যে আইসিইউতে থাকা মুমূর্ষু ১০ জন রোগীও ছিলেন।
তাদের ঢাকা, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর রাত ১২টা থেকে ছোট পরিসরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার উপ-পরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমএএম/পিএম/এমএ