ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আধুনিকতার ছোঁয়ায় চরাঞ্চলে বেড়েছে মহিষ পালন

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
আধুনিকতার ছোঁয়ায় চরাঞ্চলে বেড়েছে মহিষ পালন .

ভোলা: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ জেলা ভোলার চরাঞ্চলে মহিষ পালনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে পৌঁছে গেছে চিকিৎসা সেবা। এতে বাড়ছে দুধের উৎপাদন। আধুনিক পদ্ধতি ও উন্নত ষাঁড় মহিষ পেয়ে বাথানে (যেখানে মহিষ বাস করে) আসছে নতুন জাত।

আধুনিক পদ্ধতিতে মহিষ লালন-পালনসহ স্বাস্থ্যকর উপায়ে মহিষ পালনে সহযোগীতা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ)। গত কয়েক বছরে মহিষের মৃত্যুর হার কমেছে ও দুধের উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

এতে মহিষ মালিকরা বেজায় খুশি মালিকরা।  

সূত্র মতে, জেলার সাত উপজেলায় ছোট-বড় ৭০টি চর রয়েছে। যারমধ্যে গরু ও মহিষ চরার উপযোগী ৪৫টি চর রয়েছে। সেখানে রয়েছে ৮৮ হাজার মহিষ। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এসব মহিষ লালন-পালন করা হয়ে এলেও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মহিষ পালন ও মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় লোকসান গুনতে হতো মালিকদের। মহিষ পালনের প্রসার ও জনপ্রিয় করে তুলতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে পিকেএসএফ।  

আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) অর্থায়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের পেজ প্রকল্পের সহযোগিতায় উন্নত পদ্ধতিতে মহিষ লালন-পালন ও জাত উন্নয়নে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা চরে উন্নত জাতের ষাঁড় মহিষ ও নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। যার কারণে মহিষের আন্তঃপ্রজনন রোধ হচ্ছে ও মৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে বলে জানান মহিষ মালিকরা। .মহিষ পালনকারী চরের আবু বকর, লুৎফর ও সিরাজ উদ্দিনসহ অনেকে বাংলানিউজকে বলেন, আগে মহিষ পালন করে তেমন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেতো না। বিশেষ করে মহিষের অসুখ-বিসুখ হলে দুশ্চিন্তায় পড়তে হতো। কিন্তু এখন অনেকটা হাতের নাগালের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা। গত একবছর ধরে মহিষের মৃত্যু কমেছে। উন্নত ষাঁড় দিয়ে মহিষের প্রজনন করায় স্বাস্থ্যসম্মত বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে।  

এদিকে ভোলার চরাঞ্চলের মহিষের চিকিৎসা ও পরামর্শ পাওয়ার কারণে দিন দিন মহিষ পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চরাঞ্চলের মহিষ পালনে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, চরাঞ্চলে মহিষ লালন-পালন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আমরা বিভিন্ন ধাপে পর্যবেক্ষণ করে আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত মহিষ পালনে সফলতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতেও এ প্রকল্পকে আরও প্রসার ঘটানোর চিন্তা রয়েছে।

ভোলা জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দিনেশ চন্দ্র কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সময়ে মহিষ লালন-পালন অনেক প্রসার লাভ করেছে। গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থাও আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করছে। জনবল সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্র দুর্গম এলাকায় যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। কিন্তু ওই সংস্থার লোকজন দুর্গম এলাকা গিয়ে মহিষের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও বার্তা দেয়। যার কারণে আমরা খুব দ্রুত সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যেতে পারি।  
 
তিনি বলেন, দ্বীপ জেলা ভোলায় প্রতিদিন ৫০০ মেট্রিক টন গরু ও মহিষের দুধের চাহিদা রয়েছে, যার বিপরীতে এ জেলায় উৎপাদন হয় ৪২০ মেট্রিক টন। এখানকার মহিষের দুধ বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা যায়। বিশেষ করে মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি দইয়ের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।