ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ ভুলে যাওয়া উচিত নয়’ 

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ ভুলে যাওয়া উচিত নয়’  রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে পেনি মরড্যান্ট

ঢাকা: যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী পেনি মরড্যান্ট বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং এই সংকটের ফলে চাপে থাকা স্থানীয় জনগণের জীবন রক্ষার্থে অপরিহার্য মানবিক সাহায্য প্রদান করছে যুক্তরাজ্য।

কক্সবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো সফরে এসে এ মন্তব্য করেন পেনি মরড্যান্ট। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের সফরকারী প্রথম ক্যাবিনেট মন্ত্রী মরড্যান্ট। যুক্তরাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী তার বাংলাদেশ সফরে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে ত্রাণ খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে দেখা করেন। সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পাওয়া নারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কিভাবে প্রতিবন্ধী শিশুরা চিকিৎসা পাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করেন। এ সকল কার্যক্রম ইউকে এইড এর সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।

২৫ আগস্ট ২০১৭ থেকে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ইউকে এইড ১২৯ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী মরড্যান্টের এই সফর রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘ মেয়াদী সমাধানের অন্বেষণ, শিক্ষার জন্য সহায়তা, দক্ষতার উন্নয়ন এবং জীবিকা নির্বাহের সুযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

ঢাকায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে মরড্যান্ট উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হলে বার্মাতে যে সকল পরিবর্তন আনা প্রয়োজন সেগুলোর বিষয়ে তিনি জোর দেবেন।  

তিনি আরো বলেন, এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষার্থে স্বল্পমেয়াদী সাহায্য প্রদানের চেয়ে বেশি কিছু ভাবার, তাদের নিজেদের ও নিজ পরিবারের টেকসই জীবন নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদানের সময় এসেছে।  

মরড্যান্ট বলেন, ইতোমধ্যে এই গুরুতর মানবসৃষ্ট মানবিক সংকটটি ব্যাপক পরিসরে জাতিগত নিধন চালিয়েছে। আমার মিয়ানমার সফরের সময় আমি সে দেশের সরকারকে প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছি যেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ফিরে আসতে পারে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের দাতাসংস্থা ইউকে এইড-এর সহায়তা ও ব্রিটিশ জনগণের অকৃপণ অনুদান প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর এবং এই সংকটের ফলে চাপে থাকা কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের একটি বড় অংশের জীবন রক্ষার্থে মানবিক সাহায্য দিয়েছে। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দিয়ে মহান উদারতা ও মানবতা প্রদর্শন করেছে। তবে আমরা অনুধাবন করি যে, বাংলাদেশ এই দায়িত্ব একা বহন করতে পারবে না।

এছাড়াও ঢাকায় মন্ত্রী মরড্যান্ট আইসিডিডআরবি’র কলেরা ও পানিবাহিত রোগ দূরকরণের চিকিৎসা ও গবেষণা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।  

যুক্তরাজ্য আইসিডিডিআরবি’র গবেষণা কার্যক্রম ও জীবন-রক্ষার্থে উদ্ভাবনমূলক কার্যক্রমে সহায়তা করে আসছে।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে যুক্তরাজ্য সরকারের ৫০ লাখ পাউন্ড সহায়তাসহ দ্রুত দুর্যোগ সাড়াদান কমিটি আপিলের মাধ্যমে ব্রিটিশ জনগণের তিন কোটি পাউন্ড আর্থিক পরিমাণ অকৃপণ অনুদানের ধারাবাহিকতা হিসেবে  মরড্যান্টের এই বাংলাদেশ সফর।

যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী পেনি মরড্যান্ট গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসেন। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।