ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভবনগুলো ব্যবহারের উপযোগী কিনা, জানা যাবে এক সপ্তাহ পর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
ভবনগুলো ব্যবহারের উপযোগী কিনা, জানা যাবে এক সপ্তাহ পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের ১১ সদস্যের কমিটির সদস্যরা/ছবি- জি এম মুজিবুর

ঢাকা: পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের স্থল পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী (পুর কৌশল বিভাগ) বলেছেন, ভবনগুলো ব্যবহারের উপযোগী কিনা, তা জানা যাবে এক সপ্তাহ পর।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হওয়া ওয়াহিদ ম্যানশনের গ্রাউন্ড ফ্লোর ও দ্বিতীয় তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিম ও কলামগুলো বিশেষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বিম ও কলাম তেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। তবে কতোটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এক সপ্তাহ পর জানা যাবে, ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী কিনা।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গঠিত ১১ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী ওই টিমের একজন সদস্য।

পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগুন লাগা অন্যান্য ভবনগুলোও আমরা পরিদর্শন করেছি। ভবনগুলো টিকে থাকার জন্য বিম ও কলাম প্রাথমিকভাবে ভালো মনে হয়েছে। তবে এগুলো ব্যবহারের উপযোগী কিনা, পরীক্ষা শেষে এক সপ্তাহ পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বুয়েটের এ অধ্যাপক আরো বলেন, ওয়াহিদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলার পুরোটাতেই গোডাউন ছিল। এটি বেশ বড় ভবন হওয়া স্বত্ত্বেও আগুন নির্বাপনের কোনো ইক্যুপমেন্ট নেই। পর্যাপ্ত সিঁড়ি নেই। ভবনগুলো বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি হয়নি। অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়তো সিলিন্ডার বিস্ফোরণে, কিন্তু ক্যামিকেলের কারণে আগুনটি ছড়িয়েছে।

অন্যদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) অনুমোদিত কিনা, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কমিটির আরেক সদস্য রাজউকের অথরাইজড অফিসার মো. নুরুজ্জামান জহির।

ভবনের সঙ্গে ভবন লাগোয়া থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনাকে (সাংবাদিক) বুঝতে হবে এটা পুরান ঢাকা। এখানে অনেক আগে থেকেই ভবন তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে রাজউক অনেকদিন ধরে কাজ করছে। তবে সবার আগে দরকার সচেতনতা। এভাবে ভবন নির্মাণের নিয়ম নেই বলেও জানান তিনি।  

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড. ইশতিয়াক আহমেদ (পুর কৌশল বিভাগ-বুয়েট), লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান (পরিচালক-ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স), মো. আসাদুজ্জামান (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. জাফর আহম্মেদ (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. সিরাজুল ইসলাম (প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ-ডিএসসিসি), মো. নুরুল ইসলাম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-রাজউক), মো. শাহ আলম (পরিচালক-রাজউক) ও সদস্য সচিব মুন্সী মো. আবুল হাসেম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-ডিএসসিসি)।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুরক্ষাসেবা বিভাগ সংশ্লিষ্ট জরুরি কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। কন্ট্রোল রুমটির সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম চলবে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৬৭ জন পুড়ে মারা গেছেন। চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২,২০১৯
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।