ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শার্ট-টুকরো দেখে মরদেহ দাবি, মিলছে না ডিএনএ টেস্ট ছাড়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
শার্ট-টুকরো দেখে মরদেহ দাবি, মিলছে না ডিএনএ টেস্ট ছাড়া শার্টের টুকরো নিয়ে অপেক্ষারত নিহতের ভাই, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা মরদেহের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নেভিব্লু রঙের শার্টের একটি টুকরো দেখে স্বজনরা ধারণা করছেন মরদেহটি তাদের। হয়তো এটাই মো. আহসান উল্লাহর (৩২) মরদেহ!

প্রায় ২০ মিনিট ধরে মরদেহটিকে কয়েকবার পর্যবেক্ষণ করেছেন নিহতের স্বজনরা। তারপর তারা নিশ্চিত যে মরদেহটি তাদের।

কিন্তু ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহ হস্তান্তর করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দিন বিকেলে ব্যবসায়িক কাজে একটি দোকানে যান আহসান। পরে ওই দোকানের সিটিভি ফুটেজের আহসানের গায়ের শার্টের রঙের সঙ্গে মরদেহটির হাতের কব্জি থেকে নেওয়া শার্টের টুকরোটিকে মেলান স্বজনরা।

শার্টের টুকরোটি শার্টের রঙের সঙ্গে মিলে যাওয়া স্বজনদের দাবি এটি আহসানের মরদেহ। এছাড়া তারাও আরও দাবি করে বলছেন, শার্টের টুকরো পাওয়া মরদেহ সঙ্গে আহসানের শারীরিক গঠন হুবহু মিল রয়েছে।

তবে স্বজনদের এমন দাবিতে সাড়া দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা জেলা প্রশাসন।

তারা বলছেন, শার্টের একটি টুকরো দিয়ে এই মরদেহ শনাক্তকরণ সম্ভব নয়। ডিএনএ টেস্টে ছাড়া এই মরদেহ হস্তান্তর করা যাবে না।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢামেক হাসপাতাল মর্গে সামনে সকাল থেকেই আহসান পরিবারের সদস্যদের ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে এনিয়ে চলছে বাকবিতণ্ডা।

এর আগের শুক্রবার(২২ ফেব্রুয়ারি)আহসানের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ বড় ভাইয়ের মরদেহ শনাক্তকরণে সিআইডি’র কাছে ডিএনএ’র নমুনা দিয়ে যান।

মৃত আহসানের ব্যাগের কারখানার ম্যানেজার মো. রাশেদ বাংলানিউজকে বলেন, চকবাজারের আগুনের দিন বিকেলে ভাই(আহসান) রাজধানীর সাতরোজা চক্ষু মিয়ার গলিতে অবস্থিত নিজের ব্যাগের কারখানা থেকে চকবাজারের বাদশা ম্যানশনে যান মালপত্র দিতে। পরে তিনি রাতের দিকে ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে হায়দার ফার্মেসিতে যান শ্বাসকষ্টের ওষুধ কিনতে। এরপরে ওখানে আগুন লাগার পর থেকে তিনি নিখোঁজ।

আহসানের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে ভাইকে অনেক খোঁজাখুজি করেছি। একপর্যায়ে নিরাস হয়ে গতকাল ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিয়ে গেছি। কিন্তু আজকে মিটফোর্ডে গিয়ে শার্টের টুকরো দেখে ভাইয়ের মরদেহ চিনতে পারছি। পরে এই শার্টের টুকরো নিয়ে ডাক্তাদের কাছে গেলে তারা বলেন, এই মরদেহ চেনা যায় না, ডিএনএ টেস্টের ছাড়া মরদেহ দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, পরে পুলিশ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের লোকজনের কাছে গেলে তারা বলেন, ডাক্তারদের ফরেনসিক প্রতিবেদন ছাড়া তারা মরদেহ হস্তান্তর করতে পারবে না। এখন মনে হয় ডিএনএ টেস্টে ছাড়া ভাইয়ের মরদেহ চিনতে পেরেও নিতে পারবো না।

আহসানের ৪ বছর বয়সী মাকসুদ রহমান ও দেড় বছর বয়সী শরীফ উদ্দিন নামে দু’টি ছেলে সন্তান রয়েছে।

এ বিষয়ে সিআইডির সহকারী ডিএনএ অ্যানালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন বলেন, এই মরদেহ আমরা হস্তান্তর করতে পারবো না ফরেনসিক ও পুলিশ প্রতিবেদন ছাড়া।

মো. আহছান উল্লাহর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের নরেতনপুরে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে রাজধানীর সাতরোজা চক্ষু মিয়ার গলিতে অবস্থিত নিজের ব্যাগের কারখানা চালাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
এমএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।