ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিএনপির সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার ঘটনা শোনালেন মাহি বি. চৌধুরী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
বিএনপির সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার ঘটনা শোনালেন মাহি বি. চৌধুরী সংসদ ও মাহি বি. চৌধুরী

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা তুলে ধরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরী।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘটনা তুলে ধরেন।

মাহি বি. চৌধুরী বলেন, এ সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিলো।

এক তরফভাবে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিষদগার করা হয়েছিলো। অন্যায়ভাবে তাকে অপসারণ করা হয়েছিলো। আমি তখন এ সংসদের সদস্য ছিলাম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম শ্রদ্ধার রাজনীতি শুরু হোক। আমি যখন থেকে রাজনীতি শিখেছি, তখন থেকেই জেনেছি আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু আমি দেখেছি আমার বাবা বদরুদ্দোজা চৌধুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কিভাবে শ্রদ্ধা করতেন।

তিনি আরও বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিলো, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো, তিনি একজন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির (জিয়াউর রহমান) কবর জিয়ারত করতে যাননি। এ কারণে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাত্র সাত মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একদিন বিএনপি নেতা তারেক রহমান আমাকে ফোন করে বললেন, আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিনার করবো, তিনি মেন্যুও জানিয়েছিলেন। আমি আমার মাকে জানালাম। ডিনার তৈরি হচ্ছে এ সময় বঙ্গভবনের নিরাপত্তার পরিবর্তন হলো। পিজিআরকে (স্বতন্ত্র প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট) সরিয়ে এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) নিয়ন্ত্রণ নিলো। এরপর বিএনপির সংসদীয় দলের সভায় রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির সংসীয় দলের নেতার খালেদা জিয়া আমাকে বললেন, তুমি দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, তুমি এ সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে দেবে এবং পদত্যাগপত্র নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। এরপর ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ২৯ বার আমার ওপর আক্রমণ করা হয়। আমাদের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন নিয়ে কোনো রকম আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। আমরা বাসা ভাড়া পাইনি, বাসা ভাড়ার জন্য সেখানে যাই সেখানেই সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বাঁধা দেয়। আজ ১২ বছর পর হয়ে গেছে আমরা একটি মামলা করেছি, তার কোনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে আমরা নির্বাচন করেছি। এর আগে আমরা ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে একটি জোট করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট হবে না। কিন্তু এতে তারা রাজি হননি। ড. কামাল হোসেন তার বাসায় আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তার বাড়ি দরজা বন্ধ রেখেছিলেন। লুকিয়ে লুকিয়ে তারা অনৈতিক চুক্তি করলেন। যার ফলে অনৈতিক ঐক্য-জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেন। তখন আমরা আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, জাতীয় পার্টির জোটে যাই। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে অংশ নিলাম। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে, কিন্তু যখন মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন, স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রশ্ন আসবে, তখন আমাদের ঐক্য অক্ষুণ্ন থাকবে।

** মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় ১৭০০ বিদেশিকে সম্মাননা
** চকবাজারের ঘটনায় জাতীয় সংসদে শোক

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯
এসকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।