ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধা নরেশ বর্মণের দুর্দিনের অবসান ঘটছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৯
মুক্তিযোদ্ধা নরেশ বর্মণের দুর্দিনের অবসান ঘটছে

ঢাকা: পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিনাতিপাত করতে থাকা নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশ চন্দ্র বর্মণের দুর্দিনের অবসান ঘটতে চলেছে। তার পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি তার প্রাপ্য সম্মানটুকু পেতে চলেছেন, এমনকি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের তৎপরতায় এই সুদিন ফিরছে নরেশ চন্দ্রের।

জানা যায়, জলঢাকার গোলনা ইউনিয়নে সরকারের খাস জমিতে কোনো রকমে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে জীবন যাপন করছিলেন প্রায় ৭৪ বছর বয়সী নরেশ। একাত্তরে অস্ত্র হাতে দেশমাতৃকার জন্য লড়াই করলেও তাকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছিল ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে।

মুক্তিযোদ্ধা নরেশের মাথায় বেশ বড় একটি টিউমার আছে, অর্থাভাবে সেই চিকিৎসাও তিনি করাতে পারছেন না। হাঁপানির পাশাপাশি নরেশ আরও নানা ব্যাধি শরীরে নিয়ে চলছেন।  

এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর একটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তা নজরে আসে জলঢাকার সন্তান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের। তিনি তাৎক্ষণিক এলাকায় যোগাযোগ করে খুঁজে বের করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশ বর্মণকে। এরপর ১ নভেম্বর তুরিন আফরোজ ঢাকা থেকে চলে যান জলঢাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশের গ্রামের বাড়িতে। জানতে পারেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ লড়াই করেছেন নরেশ। ভারত সরকারের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ৪১২০৪১ নং সিরিয়ালে নরেশের নাম থাকলেও আজ পর্যন্ত সরকারি গেজেটভুক্ত না হওয়ায় তাকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে।

নরেশের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ২ নভেম্বর তাকে নিয়ে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজাউদ্দৌলার কার্যালয়ে যান তুরিন আফরোজ। তখন সুজাউদ্দৌলা জানান, নরেশের যাচাই-বাছাই চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব নয়।

এরপর সোমবার (৪ নভেম্বর) তুরিন আফরোজ মুক্তিযোদ্ধা নরেশকে নিয়ে যান নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর কাছে। জেলা প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে তার চিকিৎসার জন্য তৎক্ষণাৎ নগদ ১০ হাজার টাকা এবং এক সপ্তাহের শুকনা খাবার দিয়ে আশ্বস্ত করেন, সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তিনি সুপারিশ করবেন।  

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, যেহেতু নরেশ বর্মণের নাম ভারতীয় তালিকায় আছে, তাই তার যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন হবে না। তিনি মুক্তিযোদ্ধা নরেশ বর্মণকে তার বরাবর আবেদন করতে বলেন, যেন জেলা প্রশাসক দ্রুত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা নরেশকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পারেন। এমনকি জেলা প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা নরেশের চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে যা কিছু করা দরকার, তার দায়িত্ব নেবেন বলেও আশ্বাস দেন। তাকে সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।