আবরারের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেছেন তারা। এসময় সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেসিডেন্সিয়ালের বর্তমান শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ওল্ড রেমিয়ান্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলের দিকে রেসিডেন্সিয়াল কলেজের মাঠে স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রথম আলোর অনুষ্ঠান দেখার জন্য ভিড় করেছিল। সাড়ে ৩টার দিকে যখন প্রোগ্রাম শেষের দিকে তখন হঠাৎ চিৎকার শুনলে দেখা যায় আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে আছে।
তখন আবরার বলছিল, তার বুকে অনেক ব্যথা করছে। সবাই তাকে তুলে মাঠের এক পাশে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা যখন দেখলো আবরারের অবস্থা খুবই খারাপ তখন সঙ্গে সঙ্গে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। তখন বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের জানানো হয়নি।
অনুষ্ঠান আয়োজকরা আবরারের অবিভাবক এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করে মহাখালী নিয়ে গেলেন। তারা যখন বুঝলেন আবরারের অবস্থা খুবই খারাপ তখন পাশের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীতে নিয়ে গেলেন।
তিনি আরও বলেন, ছেলেটা মারা গেছে কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে ছেলেটাকে তাৎক্ষণিকভাবে স্কুলের সাহায্য নিয়ে যদি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারতো। তারা কাউকে তথ্য না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করেছে।
এখানেই শেষ নয়, পুরো বিষয়টি চেপে রেখে অনুষ্ঠান চালিয়ে গেছেন। কিন্তু তখন আবরারের মরদেহ মেডিক্যালে পড়ে রয়েছে। স্কুলের অন্য এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক স্কুলের শিক্ষককে জানালে তখন বিষয়টি সামনে আসে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আবরারের মরদেহ তাড়াহুড়া করে ময়নাতদন্ত করতে না দিয়ে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আর এই কাজগুলো করা হয়েছে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য।
পরের দিন প্রথম আলো নিউজ করেছে এটি নিছক দুর্ঘটনা। আমরা বলতে চাই মোটেও এটি দুর্ঘটনা নয়। আবরারকে খুন করা হয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড এবং একটি বড় ধরনের কারচুপি করা হচ্ছে। আমরা চাই এ ঘটনার একটি সঠিক তদন্ত হোক এবং বিচার করা হোক।
মশিউর রহমান আরও বলেন, আবরার যে তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে সেই তারটি সরানোর জন্য আগেও কয়েকজন শিক্ষার্থী আয়োজকদের কাছে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু প্রথম আলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম তখন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা দায়িত্বশীল ছিল না। এটাই প্রমাণ করে ইচ্ছাকৃতভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এসময় শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা আবরার হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
পিএম/এএ