সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামাল হোসেনের পক্ষে ১৯৮১ সালের ৯ নভেম্বর সদর উপজেলার যুগনীহাটে তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ বিহারী দাস প্রচারণায় যান। ওইদিন বিকেলে হাটে নির্বাচনী মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় বিএনপি সমর্থকরা হামলা করে।
কল্যাণ বিহারী দাসের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তৎকালীন মন্ত্রীর স্বজনরা আসামি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। পরে ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদ আলম (বর্তমানে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি) বাদী হয়ে আদালতে পুনরায় নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালত ঘটনার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামিপক্ষ এ মামলা বাতিলের জন্য টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের আবেদন নাকচ করে দেন। পরবর্তীতে আসামিরা জেলা ও দায়রা জজের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ শুনানির পর আসামিদের রিভিশন খারিচ করে দেন। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু আসামিরা এরশাদ সরকার আমলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মামলাটি রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচার কাজ বন্ধ করা হয়। ফলে এ হত্যার আর বিচার হয়নি।
কল্যাণ হত্যার পর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাঙ্গাইল শহরের আদালত রোডে কল্যাণদের বাসায় আসেন। তিনি কল্যাণের বৃদ্ধ মা-বাবাকে সমবেদনা জানান।
কল্যাণ বিহারী দাসের ভাই বিমান বিহারী দাস জানান, সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কল্যাণ হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ চারবার সরকার গঠন করলো আজও হত্যাকারীদের বিচারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
নিহত কল্যাণের বড় বোন বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা শেফালী দাস কল্যাণ হত্যার বিচারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এসএইচ