শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে প্রগতি সম্মেলন কক্ষে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদীর মধ্যকার চুক্তি ও সমঝোতা: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।
এ অধ্যাপক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিযোগ করলে তথ্যপ্রমাণ দিতে হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারতের সঙ্গে যৌথ রাডার স্থাপনা পরিকল্পনার সমালোচনা করে আনু মুহাম্মদ বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মার্কিন ‘ওয়ার অন টেরর’ বুলিকে অবলম্বন করে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় যে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছে, তারই অংশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে একের পর এক সামরিক চুক্তি করা হচ্ছে।
‘বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ভারত যা ইচ্ছা প্রকাশ করবে, বাংলাদেশ তাই মেনে নেবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিল। রিলায়েন্স, আদানি, বিজেপি কিংবা মোদীর সহযোগিতায় এ দেশ স্বাধীন হয়নি। আজ ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের নাম করে রিলায়েন্স, আদানি ও দেশি কিছু কোম্পানির স্বার্থে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। ’
গোলটেবিল আলোচনায় ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ভারত একটি বৃহৎ পুঁজিবাদী দেশ, এর পুঁজি সংশ্লিষ্ট অনেক স্বার্থ আছে। বাংলাদেশ যদি ভারতীয় পুঁজির ‘হোমল্যান্ডে’ পরিণত হয় তবে তার সঙ্গে আমাদের জাতীয় পুঁজি কখনোই পেরে উঠবে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ক্রমাগত সেদিকেই হাঁটছি।
দুই দেশের অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টন বিষয়ে এ শিক্ষক বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা পানি। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বিঘ্নিত করা যায় না। কিন্তু ভারত তা করে আসছে। ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ফোরামে যেতে হবে। অথচ বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত ১৯৯৭’র আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেনি। ভারতও অনুস্বাক্ষর করেনি নিজেদের স্বার্থে।
আলোচনা সভার শুরুতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন- জোট সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
গোলটেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শ্রভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম, শামসুজ্জামান মিলন, কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
আরকেআর/এইচজে