এদিকে, জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বরগুনায় বুলবুল আঘাত হানার ফলে যে জায়গাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে:
বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা, বালিয়াতলী, বদরখালী, নিশানবাড়িয়া, বড়ইতলা, মাঝেরচর, গুলিশাখালী, আয়লা পাতাকাটা, বুড়িরচর; বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ কালিকাবাড়ি, আলিয়াবাদ, উত্তর কালিকাবাড়ি, ভোড়া; আমতলী উপজেলার বৈঠাকাটা, পশুরবুনিয়া, জেলেপাড়া, কলাগাছিয়া, আমতলী পৌরসভার আম্মুয়ার চর; তালতলী উপজেলার খোটকারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, নলবুনিয়া, আশারচর, সখিনা ও আমখোলা এবং পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া।
এসব এলাকায় ২ লাখের বেশি মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে আশ্রায়ণ প্রকল্পের বসবাসরত লোকজন চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে দমকা হাওয়া।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৫০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৪২টি মেডিক্যাল টিম ও ৮টি জরুরি কন্ট্রেলা রুম খোলা হয়েছে।
মাঝেরচর এলাকার বাসিন্দা আবু তালেব বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরগুনায় এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা দেখে মনে হচ্ছে, সিডরের মতো ভয়াবহ হতে পারে এই ঝড়টিও। মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে, কিন্তু কিভাবে কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবো না-কি ঘরের মধ্যেই অবস্থান করবো।
বরগুনার পোটকাখালী এলাকার আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সরকার ঘর দেছে হেই ঘরে মোরা বেরিবাঁধের বাইরে থাহি। বইন্যার খবরে মনের মধ্যে ভয় ঢুইকছে কিন্তু এখানে কাছে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নাই, যেখানে গিয়ে আমরা আশ্রয় নেবো। এহন একমাত্র ভরসা আল্লাহ মাইয়া পোয়াগুলো (মেয়ে-ছেলে) কোনোরহম শেল্টারে পাঠামু। হেরপর আইয়া এইহানেই থাকমু।
একই এলাকার ময়না রাণী বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারেও মোগো এইসব এলাকা তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যদি বইন-বইন্যা (বন্যা) আয় হেলে মোরা করমু কি?
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, বরগুনা সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সিপিপির সদস্যরা মাইকিং করে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পাশাপাশি সিপিপির কর্মীরা তৎপর রয়েছেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাইন বিল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সিপিপি, রেডক্রিসেন্ট কর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই বেরিবাঁধের বাইরের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতি নেতারাসহ জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা সব মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এসআরএস