রোববার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।
ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ৪০ থেকে ৯০ কিলোমিটার জানিয়ে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, এটা আসলে খুবই কম।
ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, গত ৪ নভেম্বর উত্তর আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, লঘুচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে একটি প্রবল তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়টির নাম ছিল ‘বুলবুল’।
তিনি জানান, দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ‘বুলবুল’ যখন বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসে এবং আবহাওয়া অধিদফতর থেকে তীব্রতা অনুযায়ী মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি রোববার (১০ নভেম্বর) প্রথমে ভারতের একটি অংশে আঘাত হানে, এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আমাদের খুলনা হয়ে অগ্রসর হতে থাকে। অগ্রসর হতে হতে এটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ভারী বৃষ্টিপাত হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তদর জানায়, আজ ভোর ৫টার দিকে বুলবুল খুলনা, বরগুনা, বাগেরহাট অঞ্চলে এসে দুর্বল হয়ে স্থলভাগে একটি গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করে। এজন্য আমরা মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ওইসব জায়গায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত রাখতে বলে। সকাল সাড়ে ৯টায় মহাবিপদ সংকেত তুলে নেওয়া হয়।
দুর্যোগ অনেকটা কেটে যাওয়া ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত রাখতে বলা হয়েছে জানিয়ে সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্থল নিম্নচাপের কারণে এখনও সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সমুদ্রে ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকাগুলোকে এখনও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এখনই তারা সমুদ্রে যেন মাছ ধরতে না যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের বেগ নিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড হয়েছে খেপুপাড়ায় একবার ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটার, আরেকবার ৮২ কিলোমিটার। খুলনায় ৪১ কিলোমিটার, মোংলায় একবার ৫৯ কিলোমিটার ও আরেকবার ৭৮ কিলোমিটার, সাতক্ষীরায় ৮১ কিলোমিটার, যশোরে ৭০ কিলোমিটার। কয়রায় সর্বোচ্চ ৯৩ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ‘বুলবুল’ আঘাত হেনেছে।
বুলবুলের কারণে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ৪০-৯০ কিলোমিটার ছিল জানিয়ে আবাহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে মোংলায় ১৫৯ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাত ৫০-১৬০ মিলিমিটারের মধ্যে ওঠানামা করেছে।
১০ নম্বর পিবদ সংকেত নামিয়ে বর্তমানে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেদ দেখানো হয়েছে জানিয়ে পরিচালক বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে আবহাওয়া ধীরে ধীরে অনুকূল হতে থাকবে। তখন বিদ্যমান সংকেতটিও প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ