রোববার (১০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এ আয়োজন করে বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক মুশতাক হোসেন।
বিকেলে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এসময় মানবেন্দ্র লারমাকে নিয়ে তিনি বলেন, তিনি চেয়েছিলেন একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তিনি শুধু পার্বত্য অঞ্চলের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন জাতীয় নেতা। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার হারা মানুষের কথার পাশাপাশি তিনি দেশের সমগ্র খেটে খাওয়া, মেহনতি, শ্রমজীবী মানুষের কথা বলে গিয়েছেন।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, যে জাতি নিজেদের বৈচিত্রগুলো আরও বৈচিত্রমণ্ডিত করতে পারে, তাদের উন্নয়ন অবধারিত। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সেই বৈচিত্র এনে দেশের গণতন্ত্রকে একটি অর্থপূর্ণ গণতন্ত্র দিতে চেয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় সমাজ বিনির্মাণ করে একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এক কঠিন সময় পার করছে। আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের মূল স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে সরে গেছি, সঙ্গে রাষ্ট্রও। মতামত, ধর্মীয়, ভাষাগত বিভিন্ন শ্রেণীবৈষম্য এখন আমাদের সমাজে তীব্রভাবে বিরাজ করছে। অথচ মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা একটি মানবিক সমাজের কথা বলেছিলেন, শিক্ষা বিস্তারের কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন। এম এন লারমার দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবু সাইদ খান, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির স্টাফ সদস্য চঞ্চনা চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার বিপ্লবী জীবন, কর্ম ও রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রকৃত বাংলাদেশ গঠনের জন্য এম এন লারমার আদর্শকে ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি বলেও এসময় উল্লেখ করেন তারা।
এর আগে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন সংগঠন। সঙ্গীত পরিবেশন করেন আদিবাসী নারীদের ব্যান্ডদল এফ মাইনর। পুরস্কার ও সনদপত্র দেওয়া হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা শিশুদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
এইচএমএস/আরবি/