রোববার (১০ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, লন্ডনের কেনসিংটন টাউন হলে শনিবার (০৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন। এ বছর বাংলাদেশ প্রথমবারের মত কমনওয়েলথ মেলার সভাপতিত্ব করেছে।
মেলায় উদ্বোধনী বক্তব্যে লর্ড তারিক আহমেদ বলেন, আমার সৌভাগ্য হয়েছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার। আমি জানি, বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষার ব্যাপারে তার ভূমিকা অপরিসীম। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও নারী শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
লর্ড আহমেদ কমনওয়েলথ মেলা শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে যেতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন এবং এ বছরের মেলার সুন্দর আয়োজনের জন্য হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমকে ধন্যবাদ জানান।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, নারী শিক্ষায় অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বে নারীর উন্নয়ন ও নারী শিক্ষার রোল মডেল।
হাইকমিশনার কমনওয়েলথভুক্ত দেশের নারী শিক্ষা সহায়তায় তহবিল সংগ্রহের জন্য এ মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশ, প্রতিষ্ঠান ও মেলায় আসা দর্শকদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, মেলায় এ বছর প্রথমবারের মত যুক্তরাজ্যের একজন মন্ত্রী যোগ দিয়েছেন। যা মেলাকে একটি বিশেষত্ব দিয়েছে।
তাসনীম জানান, এ বছর বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন কমনওয়েলথ গার্লস অ্যাডুকেশন ফান্ডের জন্য ১৫ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেছে। আশা করা হচ্ছে, মেলা শেষে সবমিলিয়ে এ ফান্ডের জন্য গত বছরের ৩৫ হাজার পাউন্ডের চেয়েও বেশি তহবিল সংগ্রহ করা যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- কমনওয়েলথ কান্ট্রিস লীগের প্রেসিডেন্ট নলিনি পরানাভিতানে, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের ডেপুটি সেক্রেটারি ড. অর্জুন সুদধু, কমনওয়েলথ গার্লস অ্যাডুকেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান রোক্সানা সেন্ট ক্লেয়ার, কমনওয়েলথ কান্ট্রিস লীগের পেট্রন লুইসা সার্ভিস, কমনওয়েলথ মেলার সমন্বয়ক সিসিলিয়া মিউচিমি।
যুক্তরাজ্যের প্রবীণ রাজনীতিক লর্ড ডেভিড হাওয়েল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ও মেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন।
এবারের মেলায় সর্বাধিক সংখ্যক ৩৮টি দেশের ৩৪টি প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত স্টলে নানা ধরনের হস্তশিল্প ও রকমারি পণ্য-সামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রি করে।
দিনব্যাপী এ মেলায় আরও ছিল বাংলাদেশসহ কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের পরিবেশনায় ফ্যাশন শো, নাচ ও গান। দেশগুলোর মধ্যে ছিল মালয়েশিয়া, তানজানিয়া, কেনিয়া, ভারত ও জাম্বিয়া।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশি-ব্রিটিশ ডিজাইনারদের ফ্যাশন শো ও বিয়ের পোশাক প্রদর্শনী ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশ শিল্পীদের পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাজে লোকনৃত্য। যা মেলায় বাঙালি সংস্কৃতির এক মনোমুগ্ধকর আবহ তৈরি করে। দর্শকরা এসব অনুষ্ঠান গভীর আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করেন।
বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্টল ছিল মেলায় আসা রসনা বিলাসীদের পরিতৃপ্তির এক অনন্য আকর্ষণ। শেষে ছিল র্যাফেল ড্র।
কমনওয়েলথের ৭০ বছর পূর্তিতে এ বছরের মেলা পেয়েছে ভিন্নতর গুরুত্ব। মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি বর্ণিল স্মরণিকা প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
টিআর/আরবি/