সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনেরও হুমকি দিয়েছেন তরিকত ফেডারেশনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তরিকত ফেডারেশনের মুখপাত্র মাওলানা জাকির হোসাইন বলেন, ধর্ম প্রমিন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ তার এক বক্তব্যে দেশবরেণ্য আলেম-ওলামায়ে কেরামকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আলেম-ওলামাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তিনি হীন ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের মধ্যে বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা করছেন। তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রাসাসমূহকে ’আলিয়া-মালিয়া’ বলে চরম কটূক্তি ও কটাক্ষ করে দেশের আলেম-ওলামাদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন। আলিয়া মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের ন্যক্কারজনকভাবে কুকুর বলে কটূক্তি করেছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা জাকির আরও বলেন, যুগ যুগ ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্য হিসেবে সরকারি খরচে বিশিষ্ট আলেম-ওলামা ও ব্যক্তিবর্গকে হজে পাঠানোর রেওয়াজ চলে আসেছে। কিন্তু এ বছর প্রথম তিনি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে তার পছন্দের একটি বিশেষ মতের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে হজে পাঠান, যা তার প্রদত্ত বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এক কথায় তিনি দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষভাবে দেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের ধর্মীয় স্বার্থ ও স্বাধীনতা রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জামায়াতকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন দাবি করে লিখিত বক্তব্যে তরিকত ফেডারেশনের এ মুখপাত্র বলেন, আমরা মনে করি তিনি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। গত রমজানে চাঁদ দেখা নিয়ে তিনি চরমভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। কিছু দিন আগে তিনি পবিত্র মিলাদ মাহফিলের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে পরে নির্লজ্জভাবে তা অস্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ওলামায়ে-কেরামের বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাপারেও তিনি জঘন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন যে, তিনি নাকি জামায়াতের আলেমদের ইঙ্গিত করে বলেছেন। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হয়ে তিনি কোন কারণে কার স্বার্থে জামায়াতের আলেমদের হজে নিয়ে গেলেন এবং কেনইবা তাদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করলেন? তার ভাষায় তিনি ঘেউ ঘেউ বন্ধ করার জন্য কুকুরদের হজে পাঠিয়েছেন। যাই হোক, আমরা তার বক্তব্য এবং দুঃখপ্রকাশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তিনি যে অন্যায় করেছেন, তাতে তিনি তার মন্ত্রণালয়ে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি সহজভাবে মেনে নেবেন না। ইতোপূর্বে হজ নিয়ে কটূক্তি করায় দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীকে মন্ত্রণালয় এবং দল থেকে বহিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কাজেই আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে শেখ আব্দুল্লাকে অবিলম্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে অপসারণ ও দল থেকে বহিষ্কার করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তরিকত ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মনোয়ার হোসাইন রেজভী, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাঈয়্যেদ ম’তাসিম বিল্লাহ রাব্বানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আলী ফারুকী, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম মিয়াজী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আলী হোসাইন, যুগ্ম-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. খাজা বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক জাহিদ বাহার বিপুল, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক ফরিদুজ্জামান সেলিম, যুগ্ম-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক ফজলুল হক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৯
ডিএন/এইচএ/