জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি উপরে গেছে। ফলে গত শনিবার থেকে জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাজাহারুল হক জানান, গত ২দিন জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্ষতির যে হিসাব পাওয়া গেছে, তাতে নিহত ১, আহত ২১৭, ২২৮টি বসতঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে, ৩ হাজার ৯৮টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে, ১৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো বিধ্বস্ত, ৯৪৩টি নলকূপ, ১২৫০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবনের আংশিক, ১০টি সম্পূর্ণ, ৫৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, হাঁস-মুরগির খামারের ১১ কোটি টাকা, প্রায় কোটি টাকার গবাদি পশু, কৃষি বিভাগের প্রায় ১২৩ কোটি টাকা ও বন বিভাগের প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। কেননা অনেক উপজেলার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, জেলার সব উপজেলার ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব এখানো আমাদের কাছে পৌঁছেনি। তবে এ পর্যন্ত যে হিসাব পেয়েছি তাতে ক্ষতির পরিমাণ ৩শ’ কোটি টাকার উপরে হবে।
নাজিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম জানান, উপজেলা সদরের বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্রাবাসসহ উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ভবন ভেঙে গেছে।
ওই উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মো. ইস্রাফিল জানান, উপজেলার প্রায় ২ শতাধিক সম্পূর্ণ ও ৮শ’টি আংশিক মিলিয়ে প্রায় সহস্রাধীক ঘর ভেঙে গেছে। সব মিলিয়ে উপজেলার ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার এসএম আইয়ুব আলী জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় কোটি টাকার গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি মারা গেছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক খামারের প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার হাঁস-মুরগি মারা গেছে।
জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন জানান, এ পর্যন্ত যে হিসাব পেয়েছি তাতে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা এমন হিসাবের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এখানে ১৫ কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে।
জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহম্মাদ আল-মুজাহিদ জানান, ওই উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪শ’ বসতঘর আংশিক ও ৮০টি ঘর পুরোপরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে ২২০ হেক্টর জমির আমন ধান পুরোপুরি ও ৮শ’ হেক্টর জমির আমন ধানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন জানান, হঠাৎ জোয়ার ও বৃষ্টির অতিরিক্ত পানিতে জেলার বিভিন্ন মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে প্রায় সব ঘেরের মাছ বের হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৯
আরএ